মিয়ানমারের জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে। গত আড়াই বছরে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জান্তা বাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ সম্প্রতি এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, মিয়ানমারের জান্তা এখন চাপে রয়েছে। তারা জনবল, সামরিক সরঞ্জাম এবং ভূখণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। কিন্তু তারপরও ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আপস করতে অস্বীকার করছে।
মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে জান্তা বাহিনী এবং তাদের স্থাপনাগুলোর ওপর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো হামলা চালাচ্ছে। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে জান্তা বাহিনী যেসব হামলা চালাচ্ছে, তাতে মূলত বেসামরিক লোকজনই মারা যাচ্ছে। টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমার নামে একটি একক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে না।
প্রসঙ্গত, গত বছর মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট মিন্ত সোয়ে জানান, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংঘাতের ফলে মিয়ানমার টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি জান্তাপ্রধান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিয়ানমারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কিছু অঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারে।
সাধারণ জনগণের সমর্থন আদায়ে তৎপর হওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। তবে জান্তা সরকার সেই পরামর্শ উপেক্ষা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
টম অ্যান্ড্রুজ আরও বলেন, গত ছয় মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ওপর জান্তা বাহিনীর হামলায় মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশের বহু স্কুল, হাসপাতাল এবং বৌদ্ধ মঠ ধ্বংস হয়ে গেছে। মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা আমাদের কল্পনার চেয়েও অনেক খারাপ।
মিয়ানমারের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির জান্তা সরকারের নীতিতে পরিবর্তন আনা না গেলে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারময় হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল