ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কে এই ফুয়াদ শুকর ওরফে মুহসিন
অনলাইন ডেস্ক
বৈরুতে ইসরায়েলের হামলা। ইনসেটে ফুয়াদ শুকর ওরফে মুহসিন

হিজবুল্লার সিনিয়র কমান্ডার ফুয়াদ শুকর ওরফে মুহসিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বৈরুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েল দাবি করেছে, হিজবুল্লাহর শীর্ষ এই কমান্ডার নিহত হয়েছেন। তবে হিজবুল্লাহর সূত্র বলেছে, তিনি বেঁচে গিয়েছেন।

খবর অনুসারে, ফুয়াদ শুকর হিজবুল্লাহর কমান্ডার হিসেবে ইসরায়েলি অধিকৃত গোলান হাইটসের মজদাল শামসে আক্রমণের দায়িত্বে ছিলেন।  কয়েকদিন আগে সেখানে হামলায় ১২ জন ইসরায়েলি দ্রুজ যুবক নিহত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস প্রোগ্রাম অনুযায়ী, ফুয়াদ শুকরের মাথার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।

ফুয়াদ শুকর হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহর সামরিক উপদেষ্টা ছিলেন এবং তিনি ৩০ বছর ধরে এই সংগঠনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সংগঠনের অপারেশনস রুমের প্রধান ছিলেন। শুকরকে ‘হাজ্জ মুহসিন’ এবং ‘মুহসিন শুকর’ নামেও ডাকা হয়।

ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, ফুয়াদ হিজবুল্লাহর সবচেয়ে উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের দায়িত্বে ছিলেন, যার মধ্যে সুনির্দিষ্ট-নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র, দীর্ঘ-পাল্লার রকেট এবং ইউএভি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিনি হিজবুল্লাহ বাহিনী গঠন এবং ইসরায়েলি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বড়সড় হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে জড়িত ছিলেন।

ফুয়াদ ১৯৮৫ সালে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হিজবুল্লাহর সবচেয়ে শীর্ষ সামরিক ফোরাম জিহাদ কাউন্সিলের সদস্যও ছিলেন।

৯০-এর দশকে, ফুয়াদ আইডিএফ এবং দক্ষিণ লেবানন আর্মির বিরুদ্ধে অনেক হামলার পরিচালনা করেছিলেন। ২০০০ সালে তিনি তিন আইডিএফ সৈন্যের মৃতদেহ অপহরণের সরাসরি জড়িত ছিলেন। হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা হার দোভের কাছে নিরাপত্তা বেষ্টনীর টহল দেওয়ার সময় ইসরায়েলি সার্জেন্ট বেনিয়ামিন আব্রাহাম, সার্জেন্ট আদি অবিতান, সার্জেন্ট ওমর সাওয়াইদকে হত্যা করে।

খবর অনুসারে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামলার পরপরই একটি জোরালো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং লেবাননের রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলী দেখা যায়। সেখানে হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি রয়েছে।

সৌদি সংবাদমাধ্যম আল-হাদাথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় দুজন নিহত হয়েছে।

মাজদাল শামসে হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় কয়েকদিন ধরে শহরটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইসরায়েলে হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে। যদিও হিজবুল্লাহ এর দায় স্বীকার করেনি।

শুকরের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট

 এক্সে লিখেছেন, ‘ফুয়াদ শুকর ‘সাইয়্যিদ’ মুহসিনের হাতে বহু ইসরায়েলির রক্ত লেগে আছে। আজ রাতে, আমরা দেখিয়েছি যে আমাদের জনগণের রক্তের মূল্য আছে, এবং আমাদের বাহিনীর কাছে কোনো জায়গা দূরবর্তী নয়।

তিনি আইডিএফ, এর কমান্ডার, গোয়েন্দা কর্মী এবং ইসরায়েলি বিমান বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, আপনাদের ক্ষমতা কেবল আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না, বরং আমাদের গর্বিত করে। আপনারা আমাদের শত্রুদের মুখোমুখি হতে এবং আমাদের জনগণের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে সক্ষম করেন।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর মঙ্গলবার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের বিস্তার রোধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। ‍সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল, জেরুজালেম পোস্ট

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর