ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় এবার ব্যবহার করা হয়েছে ভয়ংকর মার্কিন তৈরি ‘এমকে-৮৪ বোমা’। গাজার আল মাওয়াসিতে এই বোমার আঘাতে অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০০ পাউন্ড ওজনের এই বোমার আঘাতে নিহতদের দেহ বিকৃত হয়ে গলে গেছে। আল জাজিরার বরাতে জিও নিউজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই হামলা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া বাসিন্দারা হামলার ভয়াবহতা বর্ণনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, হামলার তীব্রতা এতটাই ছিল যে এটি ভূমিকম্পের সঙ্গে তুলনা করা চলে। গাজার আল মাওয়াসির বাসিন্দা ইব্রাহিম আল-বাহশেতি বলেন, আমরা যখন বোমার আঘাতে ঘুম থেকে জেগে উঠি, তখন মনে হয়েছিল আমাদের তাঁবুগুলো ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে। আগুনের ফুলকি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে, যেন আগুনের বেল্ট।
এদিকে গাজার আল মাওয়াসিতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ড্রোন তাদের লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইব্রাহিম আল-বাহশেতি আরও জানান, ‘বিস্ফোরণ এতই শক্তিশালী ছিল যে মনে হয়েছিল মাটি উল্টে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, প্রায় ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তাদের অবস্থানের কাছে, যা তাঁবুগুলোর স্থিতি ধ্বংস করে দেয়।
আল মাওয়াসিতে অবস্থানকারী ইবতিসাম আল শাকের জানান, তিনি এবং তার সন্তানরা অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। তিনি বলেন, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম যখন ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আমাদের কাছাকাছি এসে আঘাত হানে। আমি কখনও ভাবিনি যে আমি বেঁচে ফিরব। আমাদের সন্তানরা বালির নিচে চাপা পড়েছিল, তাদের কেবল মাথা বেরিয়ে ছিল। পুরো দৃশ্যটি ছিল অকল্পনীয় ভয়ের।
ইবতিসাম আরও জানান, সবকিছু আমাদের ওপর পড়েছিল এবং বোমার আঘাতে তাঁদের সন্তানদের দেহ বালির নিচে চাপা পড়ে যায়। গাজায় চলমান এই সহিংসতার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের বেঁচে থাকার লড়াই প্রতিনিয়ত কঠিন হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের হামলার ভয়াবহতা এই অঞ্চলে মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল