ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হরিয়ানায় বিজেপির বাজিমাত, জম্মু-কাশ্মীরে ভরাডুবি
দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতের হরিয়ানায় রাজ্যে সরকার গঠন করতে চলেছে দেশটির কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। রাজ্যটি ৯০ আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ৪৬ আসন। সেখানে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে বুথ ফেরত সমীক্ষার সমস্ত হিসাব-নিকাশ উল্টে টানা তিন বারের জন্য পশ্চিম ভারতের এই রাজ্যটিতে তারা সরকার গঠন করার পথে। 

৯০ আসনের মধ্যে বিজেপি জয় পেয়েছে ৪৮ আসনে, কংগ্রেস ৩৭ আসনে, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল ২ এবং অন্যরা ৩ আসনে জয় পেয়েছে। গত ৫ অক্টোবর একটিমাত্র দফায় রাজ্যটির ৯০ টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়।  

১৯৬৬ সাল থেকে কোনো সরকারই হরিয়ানায় টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকেনি। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে হরিয়ানায় সরকারে রয়েছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে রাজ্যটিতে নতুন রেকর্ড গড়লো বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের পাঁচ মাস আগেই রাজ্যটির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টাকে সরিয়ে তার জায়গায় বসানো হয় নায়েব সিং সাইনি'কে। 

অন্যদিকে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে কংগ্রেসের সাথে জোট করে সরকার গঠন করতে চলেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স। উভয় দলই বিজেপি বিরোধীদলের জোট 'ইন্ডিয়া'র শরিক দল। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসতে চলেছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর আব্দুল্লাহ। 

রাজ্যটির মোট ৯০ বিধানসভার আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৪৬ টি আসনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায় কংগ্রেস-ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট। জোটের দখলে গেছে ৪৯ আসন, বিজেপি জয় পায় ২৯ টি আসনে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতির 'পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি' (পিডিপি) ৩ টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যরা জয় পেয়েছে ৮ টি আসনে, ১ টি মাত্র আসনে জয় পেয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। সরকার গঠনের বিষয়টি স্পষ্ট হতেই শ্রীনগরে কংগ্রেস কার্যালয়ে দলীয় কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে মিষ্টি মুখ বিতরণ করার পাশাপাশি 'লং লিভ কংগ্রেস পার্টি' বলে স্লোগান ওঠে। 

প্রায় ১০ বছর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে মোট তিন দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় জম্মু কাশ্মীরে। মঙ্গলবার ছিল তার গণনা। সকাল আটটায় গণনার পর থেকেই জোর টক্কর ছিল কংগ্রেস-ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট ও বিজেপির প্রার্থীদের মধ্যে। জয়ী হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লাহ, বিজেপি'র দর্শন কুমার, সিনিয়র সিপিআইএম নেতা এম. ওয়াই. তারিগামী। 

যদিও পরাজিত প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর বিজেপি সভাপতি রবীন্দর রায়না, পিডিপি নেত্রী ইলতিজা মুফতি। 

এছাড়াও রাজ্যটির সাবেক ক্ষমতাসীন দল 'পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি' (পিডিপি), আপনি পার্টি, ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ আজাদ পার্টি- এর মত কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র দলের একাধিক প্রার্থীরাও এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। 

উল্লেখ্য শেষবার ২০১৪ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে। ওই নির্বাচনে জোট সরকার গঠন করেছিল বিজেপি ও 'পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি' (পিডিপি)। যদিও ২০১৮ সালের ১৮ জুন জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসে মেহেবুবা মুফতির নেতৃতাধীন পিডিপি। সেই সময় থেকে সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন চলছে। 

এরই মধ্যে ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। সেইসাথে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রের মোদী সরকার। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর