ঢাকা, বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অন্যের উপকারে নিজেকে সঁপে দিই
মো. আবু তালহা তারীফ
প্রতীকী ছবি

উপকার করা মহৎ কাজ। ইসলাম ধর্মে অন্যের উপকার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পুরো জীবনই অন্যের উপকারে সঁপে দিয়েছেন। নবীপ্রেমিক মুমিনরা যারা আল্লাহকে ভয় করে তার সব সময় অন্যের উপকারে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে এটাই স্বাভাবিক। 

মহান আল্লাহ বলেন, ‘সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা কোর না। আল্লাহকে ভয় কর। তিনি নিশ্চয় কঠোর শাস্তিদাতা।’ সুরা মায়েদা, আয়াত ২। 

আমরা সমাজে বসবাস করি। আমাদের পাশে প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়স্বজনের প্রতি সাধ্যানুযায়ী খোঁজখবর রাখা জরুরি। এদের মধ্যে কেউ বিপদে পড়লে তাদের উপকারে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু আজ আমরা অন্যের বিপদে পাশ কাটিয়ে চলে যাই। হাসি-তামাশা বা তার বিপদে মজা নিতে থাকি। একটি উদাহরণ দিলে সহজে বোঝা যাবে। কেউ বিপদে পড়ে তার কাছে থাকা গচ্ছিত পণ্য বিক্রি করতে চাইলে আমরা পণ্যটির দাম নির্দিষ্ট দাম থেকে কমিয়ে দিই। কেননা সে বিপদে পড়ছে বিক্রি না করে কোথায় যাবে। অবশেষে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি কম দামেই তার পণ্যটি বিক্রি করে দেয়। এই হলো আমাদের সমাজের নিষ্ঠুরতা। অথচ অন্যের সমস্যার সমাধান করে দেওয়া মুমিনের নৈতিক ও ইমানি দায়িত্ব। 

মুসলিমে উল্লেখ রয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের পার্থিব কষ্টসমূহের মধ্য থেকে একটি কষ্ট দূর করে দেয়, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার একটি বড় কষ্ট দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর অভাবের কষ্ট লাঘব করে দেয়, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার অভাবের কষ্ট লাঘব করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহতায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে, আল্লাহও ততক্ষণ তার সাহায্য-সহায়তা করতে থাকেন।’

উপকারের পাশাপাশি অন্যায় থেকেও অন্যদের বাঁচাতে হবে। মাদক, ধর্ষণ, যৌতুকসহ সমাজের সব অপকর্ম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে অন্যদের নিষেধ করতে হবে। 

মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই সর্বোৎকৃষ্ট উম্মত। তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে মানব জাতির জন্য। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজে নিষেধ কর এবং আল্লাহকে বিশ্বাস কর।’ সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০।

আমাদের অন্যের উপকারে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যের উপকার করলে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত পাওয়া যাবে। আমাদের স্মরণ রাখা উচিত, আমি যদি কোনো বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে উপকার করি তাহলে আমি কখনো বিপদে পড়লে অন্যরা আমাকে উপকার করবে। তাই আসুন, উপকার করতে না পারলেও বাকি জীবনে অন্যের ক্ষতি নয়, নিজেকে উপকারে ব্যস্ত রাখি।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর