ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ইসলামে ব্যবসাবান্ধব জীবনাচারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে
মুহম্মাদ ওমর ফারুক
প্রতীকী ছবি

পেশা হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যের কোনো তুলনা নেই। এটি এমন এক পেশা যা নিজের সমৃদ্ধি যেমন নিশ্চিত করে, তেমন নিশ্চিত করে মানবকল্যাণ। যে কারণে ইসলামে ব্যবসাবান্ধব জীবনাচারের প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কোরআন ও হাদিস বারবার ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং তার ফাজায়েল বর্ণনা করেছে। 

কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ হয়েছে- ১. এরপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। ২. হে ইমানদারগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রহণ কোর না, কেবল তোমাদের একে অন্যের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। ৩. হে ইমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং আমি তোমাদের জন্য যা ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করতে মনস্থ কোর না। 

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসেও ব্যবসাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

১. রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী নবীগণ, সিদ্দিকগণ ও শহীদগণের সঙ্গী হবে।

২. নবী (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি এমন উত্তম খানা কোনো সময় খাননি যে খানা নিজ হাতে কামাই করে খেয়েছে এবং হজরত দাউদ (আ.) নিজ হাতে কামাই করা খানা সব সময় খেতেন।

৩. হুজুর (সা.) আরও ইরশাদ করেন যে, সত্যবাদী আমানতদারি ও পরহেজগার ব্যবসায়ী ছাড়া হাশরের ময়দানে সব ব্যবসায়ী ফাসেক হিসেবে উঠবে।

উল্লিখিত আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে ব্যবসা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি জ্ঞাত হওয়া যায়। ব্যবসা করা রসুল (সা.)-এর সুন্নত এবং এ ব্যাপারে আল্লাহর সুনির্দিষ্ট নীতি নির্ধারিত হয়েছে। সুন্নত তরিকা মোতাবেক ব্যবসা করতে পারলে তা হবে একটি ইবাদত। 

কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যের সব রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামবিরোধী অপশক্তি। তাদের হাতে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ব্যবসার পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সুদ ও লাগামহীন মুনাফানির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য সুপরিকল্পিত কৌশল আজ দুনিয়াকে গ্রাস করে ফেলেছে। বরং হুজুর (সা.) এমন রাস্তা ও নিয়ম পদ্ধতি দিয়েছেন যা মেনে চললে ব্যবসা-বাণিজ্যে অধিক লাভবান হওয়া যাবে এবং তাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকত হাসিল হবে। 

নবুয়ত প্রাপ্তির আগেই রসুল (সা.) নিজে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সততা ও আমানতদারির সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করেছেন। নবুয়ত প্রাপ্তির পর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে লাভ করেছিলেন সুউচ্চ খ্যাতি। 

ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে হুজুর (সা.) আল্লাহ-প্রদত্ত যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তা কিয়ামত পর্যন্ত তামাম পৃথিবীর জন্য হবে সুনির্দিষ্ট পাথেয়।  আমাদের সবারই উচিত ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আল কোরআন ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের  নির্দেশনা অনুসরণ করা।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর