ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মানুষ পৃথিবীতে অবতরণ করে শুক্রবার
মাইমুনা আক্তার

সৃষ্টির পর মানুষের প্রথম আবাস ছিল জান্নাত। যেখানে কোথাও কোনো অশান্তি নেই, অভাব-অনটন নেই, দুশ্চিন্তা নেই। চারদিকে ফুলে ফলে ভরা। যা চায়, সবই পাওয়া যায়।

মানুষ তথা আমাদের আদি পিতা আদম (আ.) ও আদি মাতা হাওয়া (আ.) সেখানে খুব সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি বললাম, হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং যেখানে যা ইচ্ছা খাও, কিন্তু এই গাছের নিকটে যেয়ো না, গেলে তোমরা সীমালঙ্ঘনকারীদের মধ্যে শামিল হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৩৫)

কিন্তু অভিশপ্ত ইবলিসের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মানুষকে একসময় দুনিয়াতে অবতরণ করতে হয়। যেহেতু সে আদম (আ.)-কে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানানোয় অভিশপ্ত হয়েছে, তাই তার লক্ষ্য ছিল আদম (আ.)-এর ওপর এর প্রতিশোধ নেওয়া।

তাই সে প্রথমে আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর খুব আপনজন বনে গেল এবং নানা কথায় তাদের ভোলাতে লাগল। একপর্যায়ে সে বলল, ‘তোমাদের রব তোমাদের ওই গাছটির কাছে যেতে নিষেধ করেছেন এই জন্য যে (ওই গাছের ফল খেলে) তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাবে কিংবা তোমরা এখানে চিরস্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাবে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০)। একপর্যায়ে সে তাঁদের উভয়ের কাছে কসম খেয়ে বলল যে আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২১)।

‘এভাবেই সে আদম ও হাওয়াকে সম্মত করে ফেলল এবং তার প্রতারণার জালে আটকে গিয়ে তারা উক্ত নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল আস্বাদন করল। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুপ্তাঙ্গ প্রকাশিত হয়ে পড়ল এবং তারা তড়িঘড়ি গাছের পাতাসমূহ দিয়ে তা ঢাকতে লাগল। আল্লাহ তাদের ডেকে বললেন, আমি কি তোমাদের এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? (সুরা আরাফ, আয়াত : ২২) তখন তারা অনুতপ্ত হয়ে বলল, ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৩)।

‘আল্লাহ তখন বললেন, তোমরা (জান্নাত থেকে) নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। তোমাদের অবস্থান হবে পৃথিবীতে এবং সেখানেই তোমরা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সম্পদরাজি ভোগ করবে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৪) তিনি আরো বললেন যে ‘তোমরা পৃথিবীতেই জীবনযাপন করবে, সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং সেখান থেকেই তোমরা পুনরুত্থিত হবে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৫) এভাবেই মানবজাতি জান্নাত থেকে পৃথিবীতে আসে। যেদিন পৃথিবীতে তারা আসে, সে দিনটি ছিল জুমার দিন বা শুক্রবার। হাদিস শরিফে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এ দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিন তাঁকে জান্নাতে দাখিল করা হয়েছে এবং এ দিন তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৬১)

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর