ঢাকা, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সৎ-অসৎ সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার
মুনতাসির কামাল মাহির

মানুষ অন্যের কাছে সবসময় সদ্ব্যবহার আশা করে। এমনকি যে ব্যক্তি বদমেজাজি ও অন্যের সঙ্গে অসদ্ব্যবহারকারী, সেও চায় যে তার সঙ্গে যে সদ্ব্যবহার করা হয়। সুতরাং সদ্ব্যবহার সবার কাঙ্ক্ষিত বস্তু। কিন্তু অনেক সময় পারিপার্শ্বিক কারণে এমনটি করা হয় না। এক্ষেত্রে প্রথম কথা হলো, মানবতার ধর্ম ইসলামে মানুষের সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে সুন্দর ও উত্তম কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সরল সঠিক কথা বলো, তাহলে তিনি তোমাদের কাজকে ক্রটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে।’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৭০-৭১) 

অন্যের সঙ্গে সদ্ব্যবহার ও সদাচার জান্নাতে যাওয়ার সোপান। আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি—‘সচ্চরিত্র ও সদাচারই দাঁড়িপাল্লায় মধ্যে সবচাইতে ভারি হবে। সচ্চরিত্রবান ও সদাচারি ব্যক্তি তার সদাচার ও চারিত্রিক মাধুর্য দ্বারা অবশ্যই রোজাদার ও নামাজির পর্যায়ে পৌছে যায়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৩)

ইসলাম শুরু থেকেই মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এজন্য ইসলাম পারস্পরিক সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছে। আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)

সদ্ব্যবহার ও সদাচারের মনোভাব সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক হয়। কর্মক্ষেত্রে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে নৈকট্য ও দূরত্ব কখনো কখনো মানুষের জন্য বিপদের কারণ হয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নিজের বন্ধুর সঙ্গে ভালোবাসার আধিক্য প্রদর্শন করবে না। হয়তো সে একদিন তোমার শত্রু হয়ে যাবে। তোমার শত্রুর সাথেও শত্রুতার চরম সীমা প্রদর্শন করবে না। হয়তো সে একদিন তোমার বন্ধু হয়ে যাবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৯৭)

মনে রাখতে হবে যে সৎ-অসৎ নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনুল হানাফিয়া (রহ.) বলেন, পবিত্র কোরআনে বর্ণিত—‘সদ্ব্যহারের প্রতিদান সদ্ব্যবহার ছাড়া আর কী হতে পারে।’ (সুরা আর রাহমান, আয়াত : ৬০) শীর্ষক আয়াত পুণ্যবান ও পাপাচারী সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আবু আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, আবু উবায়েদ (রহ.) বলেছেন, এটি হলো সাধারণ নীতি অর্থাৎ সৎ ও অসৎ সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা উত্তম। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১২৯)

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর