ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পিকে হালদারের ভাই প্রাণেশের জামিন খারিজ করলো কলকাতার আদালত
দীপক দেবনাথ, কলকাতা
ফাইল ছবি

প্রভাবশালী তকমা, তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা ও বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা- মূলত এই তিন কারণ দেখিয়ে প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিন খারিজ করে দিল কলকাতার নগর দায়রা আদালত।

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত পি.কে হালদারের ভাই ও এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিনের আবেদনের শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে এক বিশেষ আদেশে আদালতের তরফে এই জামিন খারিজের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। 

গত ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে তোলা হয় প্রাণেশ কুমার হালদারসহ মোট ছয় অভিযুক্তকে। 

ওইদিন থেকেই মূলত প্রাণেশের জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়। প্রাণেশের জামিনের স্বপক্ষে আদালতে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী মিলন মুখার্জি। যদিও সেই জামিনের বিরোধিতা করে সওয়াল করেন ইডি'র আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী। 

প্রায় দেড় ঘণ্টার কাছাকাছি শুনানি চলে। যদিও দুই পক্ষের বক্তব্যের শোনার পর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ওইদিনও প্রায় এক ঘন্টা ধরে চলে জামিনের শুনানি। শুনানি শেষে প্রাণেশ সহ মোট ছয় অভিযুক্তকেই আগামী ২৮ মার্চ ফের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেয় কলকাতার নগর দায়রা আদালত। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক মামলার পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য করেন।

যদিও কেবলমাত্র প্রাণেশের জামিনের আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা হয় পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তদের আদালতে উপস্থিত থাকার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও জানায় আদালত। সেইমতো ১৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় বিকাল তিনটায় আদালতে প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়। প্রাণেশের জামিনের আবেদন চেয়ে আদালতে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী মিলন মুখার্জি। অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করেন একাধিক নথি আদালতে পেশ করেন ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী। যদিও বিচারক শুভেন্দু সাহার সিঙ্গেল বেঞ্চ সেই অর্ডার সংরক্ষিত করে রাখে। অবশেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার আদালত এক আদেশে প্রাণেশের জামিন খারিজ করে দেয়।  

আদালতের পর্যবেক্ষণ 'অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২' এর ১ উপধারার ২ ক্লজ মোতাবেক অভিযুক্ত প্রাণেশ কুমার হালদার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি জামিন পেলে জামিন পেলে তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতে পারে। বিদেশেও পালিয়ে যেতে পারেন। তাই তার জামিন খারিজ করা হয়েছে।' 

এ ব্যাপারে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী এদিন বলেন 'অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলায় প্রাণেশের যোগ রয়েছে, এর স্বপক্ষে তদন্তকারী সংস্থা ইডি যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে জমা দিয়েছে। এই কারণেই তার জামিন খারিজ করা হয়েছে।' 

উল্লেখ্য, কলকাতার অনতিদূরে অশোকনগর সহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মে পি.কে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ইডি। এই সাথেই গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের।

গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। 'অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২' এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়।

বর্তমানে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ ৫ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছে প্রেসিডেন্সি কারাগারে, অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

 



এই পাতার আরো খবর