হুগলী নদীর তলদেশ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে মেট্রোরেল ছুটলো। তা পৌঁছালো হুগলি নদীর পশ্চিম পাড়ের শহর হাওড়ায়। বুধবার বেলা ১১ টা ৫৫ মিনিট নাগাদ পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম রেলটি গঙ্গার তলা দিয়ে হাওড়া ময়দান স্টেশনে পৌঁছায়।
কলকাতার ধর্মতলা মেট্রো স্টেশন থেকে ৪.৮ কিলোমিটার দূরত্বে হাওড়া ময়দান স্টেশনে 'এমআর-৬১২' রেকটি পৌঁছায়।
মেট্রোরেলের জেনারেল ম্যানেজার পি.উদয় কুমার রেড্ডি, অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার এইচ. এন জয়সওয়াল এই রেকে চড়ে হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনে এসে নামেন। তার সাথেই ছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্মকর্তারাসহ রেলের অন্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও। হাওড়া ময়দান স্টেশনে নেবে সেখানে পূজা দেন রেলের কর্মকর্তারা।
কিছু সময় পরেই ধর্মতলা থেকে দ্বিতীয় আরো একটি রেক 'এমআর-৬১৩' চলে আসে হাওড়া ময়দান স্টেশন পর্যন্ত। এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান স্টেশন- আগামী সাত মাস পর্যন্ত এই পথে মেট্রো টায়াল রান চলবে।
নদীর তলা দিয়ে মেট্রো চলাচলের যে সুরঙ্গ তৈরি হয়েছে, সেই লাইন দিয়েই এই প্রথম মেট্রো ট্রেনের চাকা গড়ালো। এসপ্লানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রোর ট্রায়াল রানের জন্য হাওড়া ময়দানেই এই ট্রেন দুটি রাখা হবে। ট্রায়ালের প্রথম দিন মেট্রোর গতি অত্যন্ত কম ছিল।
যদিও ঠিক কবে থেকে নদীর তলা দিয়ে মেট্রো রেল স্থায়ী ভাবে চলবে তা নিয়ে এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে মেট্রোরেল সূত্রে খবর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মেট্রোপথে জুড়তে চলেছে হাওড়া এবং কলকাতা। এই পথ চালু হলে হাওড়া থেকে খুব সহজেই কলকাতায় পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা।
সেক্ষেত্রে ভারতে এই প্রথম নদীর তলা দিয়ে মেট্রো রেল চলাচল করল। এর আগে দেশটির কোন রাজ্যে নদীপথে মেট্রো যায়নি। বাণিজ্যিকভাবে এই পরিষেবা শুরু হলে হুগলি নদীর তলদেশে ৫২০ মিটার সুরঙ্গ পার হতে মেট্রোর সময় লাগবে ৪৫ সেকেন্ড। নদী পার হয়ে ট্রেন পৌঁছাবে হাওড়া ময়দান স্টেশনে। দেশের সবচেয়ে গভীরতম এই মেট্রো স্টেশনটির অবস্থান মাটি থেকে প্রায় ৩৩ মিটার নিচে। অন্যদিকে পানির স্তর থেকে টানেলের দূরত্ব ৩২ মিটার।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে ভারতের মধ্যে সর্বপ্রথম মেট্রোরেল চলেছিল এই কলকাতা শহরে। এবার দেশের মধ্যে প্রথম পানির তলায় মেট্রো ছুটতে চলেছে সেই কলকাতাতেই। বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ