ঢাকা, সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আলিপুর মিউজিয়ামে বিদ্রোহী কবির আবক্ষ মূর্তি
দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কলকাতার আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের যে কুঠুরিতে একসময় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে রাখা হয়েছিল, সেই কুঠুরির সামনেই এবার তার একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে কবির লেখা কিছু কবিতার বইও সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

১৯২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি এই কারাগারে নিয়ে আসা হয় বিদ্রোহী কবিকে। এই কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সেলে রাখা হয়েছিল কবিকে। প্রায় ৮৭ দিন কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।

বর্তমানে এটি আর কারাগার নয়। এই কারাগারে থাকা সমস্ত বন্দিদেরই স্থানান্তরিত করা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। এরপরই এটিকে সংস্করণ করে মিউজিয়ামে রূপ দেওয়া হয়। গত বছরই আলিপুর মিউজিয়াম সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের যে কুঠুরিতে বিদ্রোহী কবি বন্দি ছিলেন, সাধারণ দর্শকদের প্রদর্শনের জন্য সেই অংশটিও অনেক আগেই খুলে দিয়েছিল কারাগার কর্তৃপক্ষ। এবার সেই কুঠুরির সামনে নজরুলের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করে তার লেখা কিছু বই, কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।যেখানে এলে বিদ্রোহী কবির বিভিন্ন কর্ম চোখে পড়বে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেওয়া তার বার্তা ও উদ্যোগ সম্পর্কে বহু তথ্য জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

শুক্রবার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কারাগারের নজরুল কক্ষ ঘুরে দেখেন এবং কবির আবক্ষ মূর্তিতে মালা দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন 'নিউ কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি' (এনকেডিএ) চেয়ারম্যান দেবাশীষ সেন।

পরে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগামী দিনে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শ এবং দেখানো পথ অনুসরণ করেই দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করার আহ্বান জানান ফিরহাদ হাকিম।

ফিরহাদ বলেন, ‘যে সেলে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন, সেখানে ওনার কিছু প্রদর্শনী এবং গ্রন্থের কিছু অংশ এখানে রাখা আছে। বিদ্রোহী কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে এটা আমাদের প্রয়াস। যতদিন তার স্মৃতি আমাদের মধ্যে থাকবে, ততদিন ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার কেড়ে নিতে পারবে না। তার কারণ কাজী নজরুল ইসলাম শুধু দেশের জন্য বিদ্রোহ করেননি, হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব কিভাবে গড়ে ওঠে, কিভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা যায়, তারও বার্তা দিয়েছিলেন।’

মন্ত্রীর অভিমত, ‘কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যু নেই। তিনি এপার বাংলা-ওপার বাংলার ভারতের দূত।’

এদিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে রাজ্যটির পূর্ব বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে। চুরুলিয়ায় ৪৩তম  কাজী নজরুল মেলার উদ্বোধনও হল এদিন।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর