তিন মাসও গেল না। জাতীয় কংগ্রেস ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন রাজ্যটির একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস।
সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে বায়রনের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। বায়রনের এই দলবদলের ফলে রাজ্য বিধানসভায় ফের ১ থেকে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা নেমে হল শূন্য (০)।
চলতি বছরের ২ মার্চ মুর্শিদাবাদের 'সাগরদিঘী' বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। ওই নির্বাচনে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী দেবাশীষ ব্যানার্জিকে পরাজিত করেন বায়রন।
সেক্ষেত্রে বিধানসভায় তাদের সদস্য ছিলেন একমাত্র বায়রন। কারণ তার আগে ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনেও একটিও আসন পায়নি কংগ্রেস। স্বাধীনতার পর কার্যত এমন দিন কখনো দেখেনি শতাব্দী প্রাচীন এই দলটি। সেদিক থেকে বায়রনের এই জয় বাম-কংগ্রেসের মরা গাঙে জোয়ার এনেছিল। বাম-কংগ্রেস জোটের তরফে 'সাগরদিঘী মডেল'কে তুলে ধরে এগোচ্ছিল। কিন্তু পেশায় বিড়ি ব্যবসায়ী সেই বায়রনের এই দলবদলে জোর ধাক্কা খেল সেই তথাকথিত 'সাগরদিঘী মডেল'।
যদিও তিন মাস আগে এই বায়রনকেই বলতে শোনা গিয়েছিল 'আমি কংগ্রেসে আছি, ছিলাম, থাকবো। কংগ্রেসকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।'
শুধু তাই নয় জোর গলায় বায়রনকে এও বলতে শোনা গিয়েছিল 'লিখে রেখে দিন, তৃণমূল আমায় কিনতে পারবে না। দরকারে আমি তৃণমূলকে কিনে নেব'।
যদিও এইদিনের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে বায়রন বলেন, 'উপনির্বাচনে আমার জয়ের পেছনে কংগ্রেসের কোন অবদান ছিল না। আমি তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত টিকিট পাইনি। তাই কংগ্রেসে যাই। বরাবরই আমি তৃণমূলের লোক।' তার অভিমত বিজেপিকে ঠেকাতে গেলে একমাত্র মঞ্চ তৃণমূল তাই আমি তৃণমূলে যোগদান করেছি কারণ তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কখনও সরব ছিল না।'
বায়রনকে পাশে বসিয়ে অভিষেকও বলেন, 'ভোটের আগেই বায়রন মনস্থির করেছিলেন জিতলে তৃণমূলে যোগ দেবেন। তারপর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। আর তাই মুর্শিদাবাদ থেকে ঘাটালে এসে তিনি তৃণমূলে যোগ দিলেন। তৃণমূলের মতাদর্শ ও বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের শামিল হওয়ার জন্য বায়রনের তৃণমূলে যোগ বলে জানান অভিষেক। বিডি প্রতিদিন/হিমেল