ঢাকা, সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কলকাতার হাসপাতালে প্রথম হাত প্রতিস্থাপন
অনলাইন ডেস্ক
এসএসকেএম হাসপাতাল

মৃতের স্ত্রীর অনড় সিদ্ধান্তে প্রথম হাত প্রতিস্থাপন হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার হাসপাতালে। এর আগে অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির কলকাতার নানা সরকারি হাসপাতালে আছে। কিন্তু ব্রেন ডেথ রোগীর হাত অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন এটা বিরলতম। ফলে চিকিৎসা জগতের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে বড় খবর এখন এটাই।

উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা এক ‘ব্রেন ডেথ’ (মৃত) যুবকের দুটি হাত নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হলো এসএসকেএম হাসপাতালে। ওই দুটি হাত আরেক যুবকের শরীরে জুড়ে দেওয়া হয়। ‘ব্রেন ডেথ’ হওয়া এক রোগীর হাত আর একজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করার ঘটনা আগে এই শহরে ঘটেনি বলেই খবর। তবে বিশ্বে এই ঘটনার সংখ্যা ১১০টির মতো। দেশের সংখ্যাটা ১৫। এই তালিকায় এবার ঢুকে পড়ল কলকাতার সরকারি হাসপাতাল। সকাল ৬টা থেকে রাত পর্যন্ত সময় লেগেছে এই প্রতিস্থাপন করতে। তবে এই প্রতিস্থানের পর কয়েকটি দিন কড়া পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে রোগীকে। কারণ এটি অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো নয়।

কেন এই প্রতিস্থাপন করতে হল?‌ গত ৯ জুলাই গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে যান উলুবেড়িয়ার রাজপুর করাতবেরিয়ার বাসিন্দা হরিপদ রানা। তাকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল উলুবেড়িয়া থেকে। ১৩ জুলাই হরিপদ রানার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়। তখন তার পরিবারের সদস্যদের মরণোত্তর অঙ্গদান সম্পর্কে বোঝান চিকিৎসকরা। হরিপদর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় আরেক যুবকের। যিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তখনই হাত দানের গুরুত্বও বোঝানো হয় পরিবারের সদস্যদের। 

হরিপদ রানার ভাইপো দেবকুমার বলেন, ‘আমরা বিষয়টিতে রাজি হলাম। কারণ কাকার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও হাত যদি অন্য রোগীদের জীবন দান করতে পারে সেটা তো ভালোই। কাকিমাও রাজি ছিলেন।’

অপরদিকে বিরাটির এক যুবক প্রায় এক বছর আগে বিদ্যুতের শকে ঝলসে যান। তার জেরে ওই যুবকের ডান–হাত বাদ দিতে হয়। তবে প্রতিস্থাপনের কথা মাথায় রেখে শিরা, ধমনী, স্নায়ু ও টেন্ডন ঠিক রেখে কোমর থেকে মাংস নিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তারপর এমন সুযোগ আসায় ওই ব্যক্তির হাত যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্রও নেওয়া হয়। ‘রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনে নাম নথিভুক্ত করা হয়। 

শুক্রবারই বিরাটির ওই যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তারপর সমস্ত প্রক্রিয়া ও অনুমতি মেলার পর ভোর ৫টা থেকে কাজ শুরু হয়। হরিপদর দু’টি হাতই কনুইয়ের কিছুটা উপর থেকে কেটে নেওয়া হয়। আর তা আর এক যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই কাজে প্রথমে মৃতের পরিবার রাজি হলেও পরে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মৃতের স্ত্রী অনড় সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অবশেষে নবজীবন পেলেন ওই যুবক।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ 



এই পাতার আরো খবর