ফ্ল্যাট প্রতারণাকাণ্ডে অভিনেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস সংসদস সদস্য নুসরত জাহান রুহিকে টানা ৬ ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করলো ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ ২০১৪-২০১৫ সালে কলকাতার পাশেই রাজারহাটে জমি কিনে ফ্ল্যাট বানানোর জন্য সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড' নামে একটি সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫.৫৫ লাখ রুপি করে অগ্রিম নেয়, যায় মোট অংক দাঁড়ায় প্রায় ২৩ কোটি ৯ লাখ রুপি। এরপর গত ৯ বছরে বিনিয়োগকারীরা কেউ ফ্ল্যাট না পেলেও সেই প্রতারণার অর্থে রাজ্যটির বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত আবাসনে একটি ফ্ল্যাট কেনেন বলে অভিযোগ। দক্ষিণ কলকাতার পাম এভিনিউতে ‘ইডেন ইম্পিরিয়াল’ আবাসনে রয়েছে নুসরতের সেই আড়াই হাজার স্কোয়ার ফুটের ওই ফ্ল্যাট।
রাজারহাটে ওই ফ্ল্যাট বিক্রিতে প্রতারণার অভিযোগের ঘটনায় নুসরতকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুধু নুসরত নন, ‘সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’ এর আরেক ডিরেক্টর রাকেশ সিং’কেও সমন পাঠিয়েছে ইডি।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কম্প্লেক্সে ইডির আঞ্চলিক সদর দপ্তরে যান নুসরত। টানা প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর এদিন বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বের হন তিনি। যদিও এ সময় গণমাধ্যমের কোনো প্রশ্নের উত্তর বিশেষ কিছু জানাতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাকে যা প্রশ্ন করা হয়েছে আমি তার উত্তর দিয়ে দিয়েছি।’
জানা গেছে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নুসরতের সমস্ত বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’এর ডিরেক্টর হিসেবে তার কি ভূমিকা ছিল, কিভাবে তিনি ওই সংস্থার ডিরেক্টর হয়েছিলেন, আর্থিকভাবে তিনি লাভবান হয়েছিলেন কিনা, সবটাই জানতে চেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য ‘সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে গড়িয়াহাটের ওই রিয়েল এস্টেট সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন নুসরত জাহান। প্রায় দু’বছরের বেশি সময় ধরে ডিরেক্টর পদে ছিলেন তিনি। এই সংস্থায় অর্থ বিনিয়োগ করে যারা প্রতারিত হয়েছেন, তারা প্রায় সকলেই নুসরাতের নাম করেই অভিযোগ জানান ইডির দপ্তরে।
ইতিমধ্যেই আলিপুর জজকটেও নুসরতের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে। সোমবার এই মামলার শুনানি থাকলেও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
তবে এর আগে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেন তৃণমূলের এই সংসদ সদস্য। গত আগস্টে সংবাদ সম্মেলনে রুপি তোলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তার দাবি ছিল, ওই সংস্থা থেকে লোন নিয়েছিলেন। পরে সুদসহ সেই অর্থ সময় মতো ফেরত দিয়েছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল