ঢাকা, সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কলকাতার আদালতে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন, ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ
দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত পি কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে (ব্যাংকশাল) ছয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ (PMLA)-এ ৩ নম্বর ধারায় চার্জগঠন করা হয়। একইসঙ্গে এদিন থেকেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হলো। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

টানা কয়েক দফায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার অভিযুক্ত পিকে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ ছয় অভিযুক্তই আদালতে হাজিরা দেন। বহু আলোচিত এই মামলার শুনানি ছিল আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে। এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’র (ইডি) পক্ষে অভিযুক্তদের সকলকে আলাদা আলাদা করে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কপি পড়ে শোনানো হয়। এ সময় অভিযুক্তরা সকলেই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করতে থাকেন। স্বাভাবিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত। এক্ষেত্রে অভিযুক্তরা যদি তাদের দোষ স্বীকার করতেন তবে সেক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর প্রয়োজন ছিল না।

এ ব্যাপারে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যেহেতু নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন, তাই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের উপর বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি বিচার সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য হয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়ার কাজ চলতে থাকবে।

অরিজিৎ চক্রবর্তী আরও জানান, এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত পৃথ্বীশ হালদার (পিকে হালদারের ভাই) বর্তমানে কানাডায় আত্মগোপন করে রয়েছে, তিনি নিখোঁজ। তাই এই মামলায় এখনো পর্যন্ত তাকে সংযুক্ত করা যায়নি। যদিও ইডির তরফে তাকে সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া এখনো চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ, বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এ ছাড়াও রাজ্যটির বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পিকে হালদারের আরও ৫ সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়।

এরপর ওই বছরের ২১ মে অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২ (PMLA)-এ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পরেই আদালতের পক্ষে দুই দফায় মোট ১৩ দিন পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্তরা।

সেক্ষেত্রে পিকে হালদারসহ ৫ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কারাগারে, অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। ইতিমধ্যেই মায়ের অসুস্থতার কারণে পিকে হালদার জামিনের আবেদন করলেও সে জামিন খারিজ হয়ে গেছে আদালতে।

অন্যদিকে নিজের শারীরিক অসুস্থতার কারণে জামিন খারিজ হয় নারী অভিযুক্ত আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারেরও। ঠিক একইভাবে বিভিন্ন সময় আদালতে জামিন খারিজ হয়ে যায় প্রাণেশ হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর