কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ উঠল। রাহুলের নেতৃত্বে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা চলাকালীন সময়ে পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সীমান্তে এই হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় রাহুল গান্ধীর গাড়ির পিছনের উইন্ড স্ক্রিন ভেঙে যায়। যদিও রাহুলের কোনও আঘাত লাগেনি। হামলার পরই গাড়ি থেকে নেমে যান রাহুল। সাথে সাথেই ছুটে আসেন কংগ্রেসের দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় মানুষরা ছুটে ছুটে এসে ভিড় জমান।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে ভারত জোড়ো ন্যায় যখন পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সীমান্তের কাটিহারে পৌঁছায়, তখনই রাহুল গান্ধীকে বহনকারী গাড়িতে এসে পড়ে একটি পাথরের টুকরো। তাতেই ওই গাড়ির পিছনের উইন্ড স্ক্রিনটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। ওই গাড়িতেই রাহুল গান্ধীর পাশেই ছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
কংগ্রেসের অভিযোগ- কাটিহার থেকে মালদায় ঢোকার পরে রাহুলের গাড়িতে ইট ছোড়া হয়। হামলার পরেই তৃণমূলকে নিশানা করে কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি ও দলটির সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে প্রবেশের পরে এক অপরিচিত ব্যক্তি ঢিল ছোড়েন। এই হামলায় গাড়ির পিছনের কাঁচ ভেঙে গেছে। এটা একেবারে গ্রহণযোগ্য নয়। আপনারাই বুঝে নিন কে ভেঙেছে, যারা ভাঙ্গার তারাই ভেঙেছে।
রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাতে ঠিকঠাক ভাবে হয় তার জন্য পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরও এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলো। এ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে অধীর বলেন, আসলে সরকার ও প্রশাসন চাইছে রাহুলের এই যাত্রায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হোক।
যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা রাহুলের গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ নস্যাৎ করে উল্টে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে নিশানা করেছেন মমতা। তার দাবি- রাহুলের গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা হয় বিহারে এবং সেই অবস্থাতেই বিহার থেকে এরাজ্যে প্রবেশ করেছেন তিনি।
এদিন দুপুরে রাহুল যখন বিহার থেকে মালদায় ঢুকছিলেন ঠিক সেই সময় মালদা জেলাতেই সরকারি অনুষ্ঠানে ছিলেন মমতা ব্যানার্জি। এরপর মালদা থেকে মুর্শিদাবাদে একটি সরকারি প্রধান অনুষ্ঠানে এসে রাহুলের গাড়ি বহরে হামলার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেম, হেলিকপ্টারে আসতে আসতে একটা মেসেজ পেলাম, যে কংগ্রেসের একজন নেতা... রাহুলের গাড়িতে নাকি কে ঢিল মেরেছে। পরে আমি খোঁজ নিলাম, কারণ আমি এসব পছন্দ করি না, আমরা এটা করিও না। এইসব নাটক করে কি লাভ! পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম এটা বাংলায় নয়, ওটা বিহারের কাটিহারে হয়েছে। গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা অবস্থায় বাংলায় ঢুকেছে। কিন্তু আমি এই ঘটনার নিন্দা করি। কারো উপর আক্রমণ হলেই আমি নিন্দা করি।
মমতার সরাসরি অভিযোগ- বিহারে সবেমাত্র বিজেপি এবং নীতিশ কুমার এক হয়েছে। ওদের রাগ থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের এখানে যেন কোন রকম দুর্ঘটনা না ঘটে। কোন রাজনৈতিক দল মিছিল করতেই পারে। শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করুক, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
অন্যদিকে, রাহুলের গাড়িতে হামলার অভিযোগ নিয়ে যখন কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক চাপ তুঙ্গে ঠিক তখনই কংগ্রেসের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়- এটি হামলা নয়, আচমকার ব্রেক কষার ফলেই গাড়ির কাঁচে চিড় ধরেছে। বিবৃতিতে বলা হয়- রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা মালদায় পৌঁছানোর পরেই বিপুল সংখ্যক জনতা তাকে দেখার জন্য রাস্তার দুপারে জমায়েত হয়েছিলেন। এসময় এক উৎসুক নারী হটাৎ করেই রাহুলের গাড়ির সামনে চলে আসেন, যার কারনে আচমকা ব্রেক করতে হয়। এর ফলে নিরাপত্তা বেষ্টিত একটি দড়ির সাথে গাড়ির কাঁচের ঘর্ষণে এই কাঁচ ভেঙে যায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ