ঢাকা, শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রাণঘাতি রোগ লিভার সিরোসিস
অনলাইন ডেস্ক

লিভার সিরোসিস একটি মারাত্মক ও প্রাণঘাতি রোগ। এতে যকৃৎ বা লিভারের কোষকলা এমনভাবে ধ্বংস হয়ে যায় যে তা সম্পূর্ণ বিকৃত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে বিপাক ক্রিয়া, পুষ্টি উপাদান সঞ্চয়, ওষুধ ও নানা রাসায়নিকের শোষণ, রক্ত জমাট বাঁধার উপকরণ তৈরি ইত্যাদি কাজ ব্যাহত হয়। দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি এমন চরম অবস্থায় ধরা পড়ে যে পূর্ণ নিরাময় তখন অসম্ভব হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এই রোগ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় মানুষকে। 

লিভার সিরোসিস কি?

কোন কারণে লিভারের কোষগুলো মারা গেলে সেখানে ফাইব্রোসিস ও নডিউল তৈরি হয় এবং লিভারের স্বাভাবিক আণুবীক্ষনিক গঠন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহৃত হয়। লিভারের ভিতরে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। রক্তের বিভিন্ন রাসায়নিক দূষিত পদার্থ যা লিভার পরিস্কার করে থাকে তা শরীরে জমা হয়। পুরো লিভার জুড়ে যদি ফাইব্রোসিস এবং নডিউল তৈরি হয় তখন এটাকে লিভার সিরোসিস বলা হয়।

লিভার সিরোসিসের কারণ:

বিভিন্ন কারণে লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে। আমাদের দেশে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসই এর অন্যতম কারণ। মদ্যপানও সিরোসিসের অন্যতম একটি কারণ। এছাড়া     বংশগত জটিলতার জন্য লিভারে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন ও কপার জমে যাওয়া, পিত্তনালী র্দীঘ সময় ধরে বন্ধ হয়ে যাওয়া, লিভারের ধমনী বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ আরও কিছু কারণে লিভার সিরোসিস হতে পারে। কিছু জন্মগত অসুখের কারণেও এই সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন : ওইলসন ডিজিজ, হেমোক্রোমেটাসিস ইত্যাদি।

রোগের লক্ষণ: অধিকাংশ ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস যখন ধরা পড়ে তখন এর চিকিৎসা অনেক জটিল হয়ে পড়ে। অনেক সময় সম্ভব হয় না। তবে সচেতন থাকলে কিছু লক্ষণ দেখে এ ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়। তখনই চিকিৎসকের কাছে গেলে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসায় রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। লিভার সিরোসিসের লক্ষণ-     ১. ক্লান্তি-ভাব,     ২. ওজন কমে যাওয়া,     ৩. ক্ষুধামন্দা,     ৪. পেট ফেঁপে যাওয়া,     ৫. পেটে ব্যথা,     ৬. জন্ডিস,     ৭. পা ও পেট ফুলে যাওয়া,     ৮. নাক, মাড়ি কিংবা খাদ্যনালী ও ত্বকের উপরিভাগে রক্তক্ষরণ হওয়া,     ৯. পুরুষত্বহীনতা    ১০. রক্তবমি ইত্যাদি।

করণীয়: চিকিৎসকদের মতে যখন কারো লিভার সিরোসিস দেখা দেয়, তখন চিকিৎসা করলেও একদম পুরোপুরি আগের অবস্থায় আসা সম্ভব হয় না। তবে নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে সে কিছুটা ভালোর দিকে যেতে পারে। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের মাধ্যমে রোগী সুস্থ হতে পারে যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল। তাই যেসব কারণে হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি আছে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এসব রোগের টিকা নিয়ে রাখা ভালো। লিভারে চর্বি জমে যাওয়ার মতো কোন লক্ষণ ধরা পড়লে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ



এই পাতার আরো খবর