ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নিমন্ত্রণে সিল্ক-মসলিন
♦ মডেল : আঁখি আলমগীর ♦ ছবি : স্টুডিও সেভেন লাইন ♦ ডিজাইন ও পরিচালনা : শান্তনু গুহ ♦ সাজ : সাজ্জাদ হোসাইন পিয়াস

একঘেয়ে জীবনে দাওয়াত আনে বৈচিত্র্য। আপনজনদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডার সুযোগ মেলে। আর বাঙালি নারীর নিমন্ত্রণের সাজে শাড়ি শেষ কথা। বাঙালিয়ানার পাশাপাশি মেলে নিজেকে অপরূপ দেখানোর অন্যরকম এক সুযোগ।

শাড়ি বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক- এটি বললে খুব ভুল হবে না। মোগলদের সময় থেকেই মসলিন শাড়ির প্রচলন শুরু হয়, তবে তখন শাড়ি পরা হতো এক প্যাঁচে। এরপর থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ফ্যাশনের মূল লক্ষ্যই ছিল শরীর আবৃত রাখা। তবে এরপর ব্রিটিশদের সংস্পর্শে এসে শাড়ির ফ্যাশনেও লাগে আধুনিকতার ছোঁয়া। এরপর এক প্যাঁচে শাড়ি পরার ধারণা পাল্টে যায়। সঙ্গে ব্লাউজের ডিজাইনেও আসে পরিবর্তন। তাঁতে বোনা সুতি শাড়ির আধিপত্য বেশি হলেও ৬০-এর দশক থেকে অন্য ধরনের কাপড় নিয়ে শুরু হয় নানা এক্সপেরিমেন্ট। যার ফলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সিল্কের শাড়ি। বর্তমানে আবারও ফ্যাশন সচেতন মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে সিল্ক।  সিল্কের মধ্যে জনপ্রিয় রাজশাহী সিল্ক। হাত বোলালেই এর মসৃণতার আমেজ পাওয়া যায়। শুধু দেশেই নয়, বাইরেও রয়েছে এর বিপুল জনপ্রিয়তা। এ বাদে আরও নানা ধরনের সিল্ক শাড়ি রয়েছে, বেনারসি, বালুচরি, কাঞ্জিভরম, তসর- পিওর সিল্ক। এর মধ্যে বেনারসি আর কাঞ্জিভরম সাধারণত বিয়েতে পরার জন্যই সবচেয়ে উপযুক্ত। ঘন কাজ করা বেশ ভারী ধরনের এই শাড়িগুলো গরমে পরার জন্য ততটা উপযুক্ত নয়। কিন্তু এক ধরনের আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলে ষোলআনা। মানুষের মাঝে এখন একটি ধারণা হয়ে গেছে, বিয়ে মানেই লাল বেনারসি শাড়ি। যদিও ফ্যাশনে ভিন্নতার হাওয়া লেগেছে এখন। ফলে লালের পাশাপাশি ম্যাজেন্টা, নীল, ময়ূরপঙ্খি নীল, রানি গোলাপি, গাঢ় বেগুনি ইত্যাদি রঙের শাড়িও পরছেন নতুন কনে। তসর, পিওর অথবা বালুচরি সিল্কের শাড়ি সাধারণ দিনগুলোতে ক্যাজুয়ালি যেমন পরা যায় আবার পার্টিতেও এগুলো পরা যায়। সঙ্গে ছিমছাম মেকআপ করে এলিগেন্ট লুক আনা সম্ভব। আবার চোখে মোটা কাজল দিয়ে স্মোকি আই তৈরি করে গর্জিয়াস লুক আনা সম্ভব।

মসলিন কাপড় নিয়ে এক মিথ হলো- এতই সূক্ষ্ম থাকে যেন মাকড়সার জাল। পাতলা ও ফুরফুরা হওয়ায় গরমে উৎসবের পোশাক হিসেবে বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে এই মসলিন শাড়ি। এর অন্যতম ভালো দিক হচ্ছে- সিল্কের মতো চাকচিক্য নেই। আবার সুতি কাপড়ের মতো সাদামাটাও নয়। দুপুর হোক বা রাত- দুই সময়ের অনুষ্ঠানেই আপনি পরতে পারবেন মসলিন শাড়ি। নানা ধরনের রং রয়েছে। যদিও এখন হালকা শেডের রংগুলোতে আভিজাত্য বেশি প্রকাশ পায়। যেমন- মাখন রং, হালকা গোলাপি, কলাপাতা, লেমন ইয়েলো, সাদা, সোনালি ইত্যাদি। রাতের দাওয়াত হলে গাঢ় রং যেমন মেরুন, গাঢ় নীল, মেরিন ব্লু, বেগুনি, লাল, সবুজ, কালো, মেরুন ইত্যাদি রংও বেছে নিতে পারেন। ডিজাইনেও রয়েছে নানা ভিন্নতা। কখনো এতে হ্যান্ড পেইন্ট করা হয় আবার কখনো স্প্রের কাজ। অনেক সময় অ্যামব্রয়ডারিতে জমকালো ভাব আনার জন্য রঙিন পুঁতি বা হাজার বুটি বসানো হয়। অ্যাপ্লিকের শাড়িগুলো আবার বেশি জমকালো হয় সেই।

শাড়ি ঠিক যেমন ধরনেরই হোক না কেন শাড়ির সঙ্গে জমকালো সাজই বেশি মানানসই। চুল খোলা রাখতে চাইলে ব্লো ডাই বা আয়রন করে নিতে পারেন। খোঁপা করলে আবার মাঝখানে সিঁথি করে নিতে পারেন। এখন বেশ চলছে এ ধরনের হেয়ার স্টাইল অথবা সামনে সামান্য একটু ফুলিয়ে নিয়ে পেছনে খোঁপা করে নিতে পারেন।  সঙ্গে ফুল দিয়ে এতে স্নিগ্ধতা যুক্ত করতে পারেন। একটু ক্যাজুয়াল লুক চাইলে চুল আলগোছে কাঁটা দিয়ে বেঁধে নিতে পারেন।

লিখেছেন : ফেরদৌস আরা

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর