হেয়ার টিজ বা চুলের জট অনেক কারণেই হতে পারে। নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করা, ঠিকভাবে ব্রাশিং না করা এমনকি শ্যাম্পু করার পর সিরাম বা কন্ডিশনার ব্যবহার না করাতেও এমন ঝামেলা পোহাতে হয়। এসব সমস্যার সমাধান একটাই। চুলের প্রতি যত্নবান হওয়া। নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা, ভালো চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে চুল আঁচড়ানো এবং চুলে শ্যাম্পু করার পর সিরাম বা কন্ডিশনার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে প্রকৃতির নিয়মে চুলে জট লেগে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আসলে কারও কিছু করার থাকে না। এমতাবস্থায় চুলের জট লাগা অংশটুকু কেটে ফেলতে হয়।
এসব ছাড়াও বিয়ের মতো জাঁকালো অনুষ্ঠানগুলোতে কনেসহ সবাই পারলারে গিয়ে চুল নানাভাবে বেঁধে নেন। এসব স্টাইল সেট করে রাখার জন্য হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। এতে চুল শক্ত হয়ে পড়ে ও সহজে খুলে যায় না। কিন্তু বেশ জটের সৃষ্টি হয়। তাই চুল বেঁধে নেওয়ার সময় হেয়ার ড্রেসারকে বলুন যতটা সম্ভব কম হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করতে। আর যদি নিজে হেয়ার স্টাইল করে থাকেন তবে কম হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে টিজ করে নেওয়ার পর চুল খুব শক্ত হয়ে পড়বে না। জট খোলা সহজ হবে।
আমাদের দেশের আবহাওয়া চুলের স্বাস্থ্যের জন্য সুবিধার নয়। রাস্তার ধুলাবালি আর দূষণ চুলকে করে নিষ্প্রাণ। ফলাফল হেয়ার ড্রাই, হেয়ার ড্যামেজ, প্রিটেন্স এবং ব্রেকেজের মতো সমস্যা হয়। এসব থেকে চুলের জট প্রবণতা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে চুলের যত্ন নিন। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার হেয়ার ব্রাশ করতে হবে। মনে রাখবেন, সুস্থ চুল পেতে নিয়ম করে চুল আঁচড়ানো উচিত। এতে মাথার স্ক্যাল্পের ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হবে। চুল ভালো থাকবে। ডগা ফাটা, ছিঁড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকবে না। এমনকি চুল পড়া কমবে এবং চুলে আটকে থাকা ধুলাবালি কমে আসবে। আঁচড়ানোর সময় প্রশস্ত দাঁড়ার চিরুনি বা ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। যা চুলে জট ছাড়ানোর জন্য দারুণ কার্যকরী।
তবে চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে চুল নিয়ে বেশি টানাটানি করবেন না। আবার শুষ্ক অবস্থায় চুল ব্রাশ করবেন না। এতে ক্ষতি বেশি হয়। চুল ভিজিয়ে নিন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুলে থাকা স্প্রে বা স্টাইলিং উপকরণ ধুয়ে যাবে। এরপর ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। আর হ্যাঁ, এরপর সিরাম বা কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। চুলের জট ছাড়ানোর ভালো দাওয়াই নারিকেল তেল। পারলারগুলো চুলের জট সমস্যার জন্য নানা সেবা প্রদান করে থাকে। সময়ের অভাবে পারলারে যেতে না চাইলে কিছু ঘরোয়া পাথেয় ট্রাই করতে পারেন। কোকোনাট অয়েল বা অলিভ অয়েল দিয়ে হেয়ারের লেন্থকে ম্যাসাজ করলে চুলে জট কমে আসবে। কন্ডিশনারের বা অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে নিম অয়েল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে হবে। কয়েক মিনিট পর চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
লেখা : শোভন সাহা (কসমোলজিস্ট)
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ