ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রুক্ষতা দূর করুন
উম্মে হানি
প্রতীকী ছবি

শেষ রাতের হিমেল পরশ আর সকালের হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীত দোরগোড়ায়।  এই হিমেল বাতাসে ত্বক হয়ে যায় রুক্ষ, খসখসে। সুন্দর মুখশ্রী তো বটেই সঙ্গে হাত এবং পা হারায় উজ্জ্বলতা। এমন নাজেহাল ত্বকের সুস্থতায় চাই সঠিক পরিচর্যা।

হিমেল বাতাস জানান দিতে শুরু করেছে শীত আসছে। তা শীত আমাদের যতই প্রিয় হোক, ত্বকের জন্য মোটেও সুখকর নয়। আসলে শীতকালের বাতাসে ময়েশ্চার কম থাকে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকে। রুক্ষ আবহাওয়ায় আমাদের ত্বকের ময়েশ্চার ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যায়। ময়েশ্চারের অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। আর সবচেয়ে ঠোঁট এবং হাত-পায়ের। তাই প্রয়োজন সঠিক পরিচর্চার। এ জন্য বিশাল আয়োজন দরকার নেই। বাড়িতেই সামান্য কয়েকটা জিনিস থাকলেই হবে। রোজ নিয়ম মেনে গোসলের সময় অয়েল ম্যাসাজ, হাত-পায়ের ত্বকে লোশন এবং ঠোঁটে ভালো মানের জেলই যথেষ্ট। আর সপ্তাহে একদিন ত্বকের যত্নে স্ক্রাবার ও মাস্ক ট্রাই করুন। দেখবেন, রুক্ষতা দূর হবে সহজেই।

শীতে ঠোঁটের যত্ন

ঠোঁট ফাটা শীতের সবারই সমস্যা। সঙ্গে ঠোঁট কালো হওয়া এবং প্রাণহীনতা। শীতে ঠোঁটের যত্ন নিয়ে ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও বিউটি এক্সপার্ট ফারনাজ আলম বলেন, ‘শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ঠোঁটের। ঠোঁট দীর্ঘ সময় শুষ্ক থাকলে অনেকেই বারবার জিব দিয়ে ঠোঁট ভেজান। যা একেবারেই অনুচিত। সময়ের অভাবে প্রয়োজনীয় যত্ন না নেওয়ার কারণে ঠোঁটের চামড়া খসে। অনেকেই আবার এ সময় মাত্রাতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করে ঠোঁট করে ফেলেন কালচে। যা একেবারেই অনুচিত।’

সমস্যা যেমনই হোক সমাধান কিন্তু সহজ। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে গেলে নিয়মিত এসপিএফ ১৫ বা ২০ যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। এবং সপ্তাহে অন্তত এক দিন গোলাপের পাপড়ি বেটে সঙ্গে মধু মিশিয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে হালকা করে ঘষুণ। এতে ঠোঁটে জমে থাকা মরা চামড়াগুলো উঠে যাবে। ঠোঁট উজ্জ্বল দেখাবে। আর শীতের এ সময় ধূমপান, ধুলাবালু, রোদের তাপ পরিহার করে চলুন।

শীতে হাত-পায়ের যত্ন

শীতে হাত এবং পায়ের ত্বক রুক্ষতা থেকে রক্ষা করা কঠিন। শুষ্ক আবহাওয়ায় কনুই, হাঁটু এবং পায়ের গোড়ালি হারায় উজ্জ্বলতা। তাই শীতের শুরু থেকেই যত্ন নিতে থাকুন। গোসলের আগে হাত ও পায়ের ত্বকে তেল ম্যাসাজ করলে ত্বকে ময়েশ্চার ব্যালান্স ঠিক থাকবে, ত্বক নরমও থাকবে। আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। না হলে নারকেল তেল তো সবার বাড়িতেই থাকে, তাও চলবে। তবে শীতের সময় ত্বক কোমল রাখতে সরিষার তেল ভালো কাজ করে। তবে যে তেলই ব্যবহার করুন না কেন ম্যাসাজ করার আগে একটু গরম করে নেবেন। ম্যাসাজ করার ১০ মিনিট পর গোসল করে ফেলুন। এরপর গোসলে হাত ও পায়ের ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে  নেবেন। গোসলের সময় মাইল্ড গ্লিসারিন সাবান বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করতে পারেন। আর গোসলের সময় হাত এবং পায়ের বিশেষ অংশ অর্থাৎ কনুই, হাঁটু এবং গোড়ালি লুফা বা পিউমিস স্টোন দিয়ে ভালো করে ঘষে পরিষ্কার করবেন। গোসল শেষে হাত-পায়ের ত্বকের ময়েশ্চার আমন্ড অয়েল ও অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন অথবা বডি লোশন বা ক্রিম লাগিয়ে নিন। ত্বক ভিজে থাকতে থাকতেই ক্রিম লাগান। কারণ, ভিজা ত্বকে ক্রিম বা লোশন সহজে অ্যাবজর্ব হয়। ফলে ত্বকের ময়েশ্চার ব্যালান্সও বজায় থাকবে। তাছাড়া সময় করে স্ক্রাবার ট্রাই করতে পারেন। সমপরিমাণ ব্রাউন সুগার ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে রাখুন। হাত ও পায়ের ত্বকের এই স্ক্রাবার দিন। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। শীতের শুরু থেকেই ২-৩ দিন অন্তর এই মিশ্রণ দিয়ে স্ক্রাব করুন। আবার সপ্তাহে অন্তত এক দিন মাস্ক ব্যবহার করুন। পার্লারের খরচ বাঁচাতে বাড়িতেই তৈরি করুন এই মাস্ক। ৩-৪টি ডিম ফেটিয়ে কয়েক ফোঁটা রোজ ওয়াটার মেশান। হাত ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। একইভাবে হাত ডুবিয়ে রাখার পর পা ডুবিয়ে রাখুন। গোসলের আগে এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর