ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বইমেলায় খলনায়ক
অনলাইন প্রতিবেদক

অমর একুশে বইমেলায় এসেছে সমকালীন লেখক আহমেদ আল আমীনের উপন্যাস খলনায়ক। উপন্যাসের বিস্তৃত জমিন গড়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি বাড়িকে কেন্দ্র করে। দুটি বর্ণনারীতিতে গল্প এগিয়ে গেছে। এই উপন্যাসে বর্ণিত গল্পের উপস্থাপন কৌশলকে লেখক শূন্যলতা স্টাইল বলছেন, যার জট খোলা দুরূহ। গল্প বলার প্রয়ােজনে শূন্যলতা এসেছে, প্রাসঙ্গিকভাবে থেকে গেছে।

একটি কিশোর ২৩ বছর পর পারিবারিক কবরস্থানে ছুটে যায় রাতের অন্ধকারে। সারারাত সেখানে থাকে। কৈশোরে সে দাদির দাফন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেও কবরে মাটি দেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলো।  দারিদ্র্যপীড়িত জীবনে লাঞ্চনা, বঞ্চনা ও আঘাতে বেড়ে ওঠা মানুষটির ভালোবাসায় বাঁধা ঘর সন্দেহ, অবিশ্বাসের আবর্তে দুলে ওঠে। পাতায় পাতায় গভীর জীবনদর্শন নতুন চিন্তার উদ্রেক করবে। হোঁচট খাওয়ার মতো জীবনের বাঁকবদল। খলনায়কের কাছে প্রচলিত বিশ্বাস ও মূল্যবোধ নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ।   এই প্রথম সাহিত্যের পাতায় উঠে এসেছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়করাজ রাজ্জাকের কথা। আছে ঢালিউড সুপারস্টার ইলিয়াস কাঞ্চন ও মান্না এবং বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবরের প্রসঙ্গও। আছে পদ্মা সেতুর কথা। কেন, এই গল্পে তাদের প্রাসঙ্গিকতা কী? এই উপন্যাসে নায়ক মান্নাকে একটি বিশেষ উপাধি দেওয়া হয়েছে।   রুশদা প্রকাশ থেকে আবির্ভূত বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। ঢাউস আকারে, আঠারো ফর্মায় লেখা বইয়ের গায়ের মূল্য সাড়ে ৫শ টাকা হলেও বইমেলা উপলক্ষে ২৫ ভাগ ছাড়ে ৪শ ১৩ টাকার বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে। পাঠকের অপেক্ষায় খলনায়ক থাকছে রুশদা প্রকাশের ২৪ নম্বর স্টলে ও অনলাইন বুকশপ রকমারি ডটকমে। মঙ্গলবার থেকে খুলনা বইমেলায় রুশদা প্রকাশের ৫১ নম্বর ও চট্টগ্রাম বইমেলায় ১৩৯ নম্বর স্টলে থাকছে খলনায়ক।  বইটির ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হাজার বছরের চিরচেনা গল্প; প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে এসেছে। কিন্তু, এভাবে কখনো লেখা হয়নি। অসংখ্য মানুষের বুকে লেখা, হৃদয়ের আর্তনাদ দীর্ঘশ্বাস হয়ে বাজে প্রতিদিন। অলিখিত সেই গল্পের লেখ্য ও কল্পিত চিত্ররূপ এবার বইয়ের পাতায়।   দারিদ্র্যপীড়িত জীবন; লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও অপমান। পুষে রাখা ক্ষোভ। জিদ। বিশ্বাস, ভালোবাসায় বাঁধা ঘর। হঠাৎ স্বপ্নভঙ্গ। বিশ্বাসঘাতকতা। সন্দেহের তিরে বিদ্ধ প্রেমিক হৃদয়। অভিমান। প্রতিশোধ। বাংলা সিনেমার নায়কের মতো প্রতিশোধ। নিজের হাতে ঘর বানিয়ে নিজের হাতেই অগ্নিসংযোগ। দাউ দাউ করে জ্বলছে একটি ঘর, একটি হৃদয়। উপন্যাস পড়তে গিয়ে মনে হবে সিনেমা দেখছি। কখনো মনে হবে, এ তো মঞ্চ নাটক! বইয়ের পাতা উল্টাবেন, গল্প পড়বেন, আর নিজেকে গল্পের সঙ্গে একাকার করে ফেলবেন। নিজেকেই মনে হবে নায়ক, আবার নিজেকেই মনে করবেন ভিলেন। আর নিজের অজান্তেই বলে উঠবেন, আমি নায়ক আমিই মাস্তান। হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি নায়ক আমিই মাস্তান।  আপনি তো মাস্তান হতে চাইবেনই। কারণ, খল চরিত্রের প্রচলিত সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে এই গল্প। এই গল্পে আপনি একজন ভিলেনের দুঃখে কাঁদবেন, বেদনায় বেদনাবিধুর হয়ে পড়বেন। অতঃপর নায়কের জন্য দু-ফোঁটা চোখের জলও ফেলবেন।  প্রসঙ্গত, আহমেদ আল আমীনের প্রথম উপন্যাস খলনায়ক হলেও তিনি লেখালিখির সঙ্গে কৈশোর থেকেই জড়িত। ২০১৫ সালে প্রথম বই প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির নলছিটিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে প্রকাশনা বিজ্ঞানী ও সম্পাদনা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুরুল ইসলামের জীবনকথা, ঝোপেঝাড়ে তারা জ্বলে প্রভৃতি।



এই পাতার আরো খবর