ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সাথে ভারতের হাইকমিশনার ও রুশ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা (উপরের ছবি) এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ অফিস কক্ষে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত পৃথক পৃথক সাক্ষাৎ করেন।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের নিকট নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা প্রদান করবে। বিশেষ করে পিয়াজ, চিনি, আদা, রসুন ইত্যাদি যাতে করে জরুরি মুহূর্তে আমদানি করা সম্ভব হয়। এটি নিশ্চিত করার জন্য একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত করার উপর গুরুত্বাপরোপ করে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ভারত যেকোনো সংকটে বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে।

ভারতের সাথে বাংলাদেশের মধ্যকার আমদানি-রপ্তানি পরিসংখ্যান তুলে ধরে আহসানুল ইসলাম টিটু ভারত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করার আহ্বান জানান। বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে বাংলাদইশ পণ্য আমদানি যেমন হস্তশিল্প, ইলেক্ট্রনিকস, পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য এবং খাদ্য পণ্য প্রবেশের সুযোগ তৈরি করার অনুরোধ জানান। এছাড়া সেভেন সিস্টার্সে বসবাসরত মানুষ যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন তাদেরকে ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহার করে ভ্রমণ করার ভারত সরকারকে অনুরোধ জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য বর্ডার হাটগুলোকে আরও সক্রিয় করতে হবে। এ সময় মৌলভীবাজারে একটি বর্ডার হাট উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে জানালে ভারতীয় হাইকমিশনার যৌথভাবে উদ্বোধন করতে সম্মত হন। এছাড়া নতুন করে বর্ডার হাট চালুর লক্ষ্যে সম্ভাব্য স্থানসমূহ চিহ্নিত করতে একসাথে কাজ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যেকার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আগামী মাসে দেশটিতে একটি মেগা শো হবে যেখানে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান।

উভয় দেশের পণ্য বহুমূখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে ভারতে বেস্ট অব বাংলাদেশ প্রোডাক্ট এবং বাংলাদেশে বেস্ট অব ইন্ডিয়া প্রোডাক্ট শো আয়োজনের পরামর্শও দেন প্রণয় ভার্মা। বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রস্তাবের সাথে একমত পোষণ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

পরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠককালে আহসানুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের ব্যবধানে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। উভয় দেশের সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে রাশিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে থাকে উল্লেখ করে এই ব্যবধান কমানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য রাশিয়াতে আমদানির আহ্বান জানালে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস, খাদ্যপণ্য ইত্যাদি পণ্য আমদানি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উভয় দেশের মধ্যে কৌশলগত বাণিজ্যিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য রাশিয়াতে বাংলাদেশি পণ্যের বিশেষ করে হস্তশিল্পের প্রদর্শনীর আয়োজন করার আহ্বান জানালে রাষ্ট্রদূত মস্কোতে প্রদর্শনী আয়োজনে সবধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশ ও রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানিতে সরাসরি বিনিময় ব্যবস্থা চালুকরণের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানান।

এ সময় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সহযোগিতার আশ্বাস দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর