ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কোটা সংস্কার নিয়ে আ স ম রবের পাঁচ দফা
অনলাইন প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

ছাত্রসমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে ৫ দফা দাবি পেশ এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষায় ছাত্রদের চলমান জাগরণের প্রতি অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব।

সোমবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পাঁচ দফা দাবি পেশ ও অভিনন্দন জানান আবদুর রব।

বিবৃতিতে আবদুর রব বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাগণ জাতির হিরন্ময় সন্তান, কোনোক্রমেই অনগ্রসর অংশ নয়। কারো বীরত্ব হস্তান্তরযোগ্য নয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর আর্থ-সামাজিক মৌলিক রূপান্তর অর্থাৎ জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্র নির্মিত হয়েছিল, তা শুধুমাত্র ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে দ্রুত পরিত্যক্ত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে, অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। বিদ্যমান সরকারের কাছে সুযোগের সমতা বিবেচনায়ই নেই। 

তিনি আরো বলেন, নাগরিকদের অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে, সংবিধানের সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোটা পদ্ধতি বাতিল করার ফলে, যে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে তা সরকারকেই নিরসন করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধ গৌরবের বিষয়-যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বহন করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হবে-বৈষম্যমুক্ত, আইনের সমতা, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার এবং সকল অংশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার সাংবিধানিক ভাবে নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে কাঙ্খিত রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা।

দেশে বছরের পর বছর ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে একটা বড় অংশ কোটা দ্বারা আবদ্ধ করায়, মেধাবীরা চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়; কোটা বহির্ভূত অংশে নিয়োগের ক্ষেত্রেও রয়েছে চরম অনিয়ম ও দলীয় অনুগতদের নিয়োগ দানের অপ্রকাশ্য রীতি। এর দ্বারা সরকার মেধাভিত্তিক প্রশাসন গড়ার পরিবর্তে, অন্ধ-অনুগত প্রশাসন গড়ে রাষ্ট্রকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে রাষ্ট্র দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়ে ওঠছে। 

বিবৃতি রব বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পরেও চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল থাকায়-এটা নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ হয় যে, দেশে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রাষ্ট্র সকলের জন্য সমতা নিশ্চিত করতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় সমাজের সকল অংশের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত কল্পে, সমাজের সকল অংশের উন্নয়ন সাধনই ছিল আমাদের লক্ষ্য। 

বিপুল ছাত্রসমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের বাস্তবতা, গতি-প্রকৃতি অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করে কোটা সংস্কার করার নিমিত্তে এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে ৫ দফা দাবি-

১) ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অন্তর্ভুক্তকরণ। ২) সমাজে নাগরিকদের অনগ্রসর অংশ চিহ্নিতকরণ ও সুনির্দিষ্টকরণ।  ৩) প্রজাতন্ত্রের কর্মে স্বচ্ছতার মাধ্যমে সৎ ও মেধাভিত্তিতে নিয়োগদান নিশ্চিতকরণ। ৪) চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল ধরনের কোটা মিলে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০% এর মধ্যে সীমিতকরণ।  ৫) অনির্দিষ্টকালের জন্য কোটা পদ্ধতি রহিতকরণ; অনগ্রসর অংশের উন্নয়ন নিশ্চিত করে ক্রমান্বয়ে কোটা পদ্ধতি বিলোপ সাধন।’

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর