ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

উচ্চমাধ্যমিকে কৃতকার্য মা-ছেলে, কিন্তু বাবা অকৃতকার্য!
অনলাইন ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি

আনন্দ ও বিষন্নতার অদ্ভূত পরিবেশ ভারতের নদিয়ার পতিকাবাড়ি গ্রামের মণ্ডল পরিবারে। একদিকে মা ও ছেলের ভালভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার খুশি, অন্যদিকে বাবার একই পরীক্ষায় ফেল হওয়ার বিষন্নতা। এক যাত্রায় এই পৃথক ফলে খানিকটা থতমত পাড়া-প্রতিবেশীরাও। বুঝেই উঠতে পারছেন না শুভেচ্ছা জানাবেন না সান্তনা দেবেন।

পরীক্ষার খাতার হিসাব অনুযায়ী অন্যান্যদের মতোই তিন পরীক্ষার্থী ছিলেন বলরাম মণ্ডল, কল্যাণী মণ্ডল ও বিপ্লব মণ্ডল। কিন্তু বাস্তবে এ ছিল শিক্ষার এক আশ্চর্য লড়াই। কারণ ছেলে বিপ্লবের সঙ্গেই ফের পড়াশোনা শুরু করছিলেন বলরাম ও কল্যাণী মণ্ডল। 

স্কুল ইউনিফর্ম পরে একসঙ্গেই স্থানীয় হাজরাপুর হাই স্কুলে যেতেন স্কুলে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে। এমনকি ক্লাসরুমে বসে পড়া শুনতেন, নোট নিতেন। কারণ ঐচ্ছিক বিষয়ও ছিল এক। সারাদিনের কাজ সেরে দুপুরের দিকে পড়তে বসতেন কল্যাণী। আর বলরাম পড়তেন চাষের কাজ সেরে এসে রাতে। প্রাইভেট টিউটরের কাছে যে পড়া বিপ্লব নিজে বুঝত। বাড়ি এসে তা বাবা-মাকেও বুঝিয়ে দিত। পরীক্ষার সময়ও একসঙ্গেই উত্তরপত্র লিখেছিলেন তিন জন।

তবে ফল একটু আলাদা হয়ে গিয়েছে এবার। ৩২ বছরের কল্যাণী ৪৫.৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হয়েছেন। আর ছেলে বিপ্লবের প্রাপ্তি ৫০.৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হয়েছেন। মা ও ছেলে দু’জনেই উত্তীর্ণ ভালভাবেই। প্রাপ্ত নম্বর পেয়ে খুশি দু’জনেই। কিন্তু পিছিয়ে পড়েছেন বলরাম মণ্ডল। উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করার জন্য পর্যাপ্ত নম্বর পাননি তিনি। ছেলে ও স্ত্রীর জন্য খুশি হলেও নিজের নম্বরে অখুশি বলরাম। পরীক্ষা বেশ ভাল হয়েছিল তার। তারপরও এমন নম্বর কেমন করে এল তা নিয়ে দ্বিধায় তিনি। নম্বর রিভিউ করতে দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে মা ও ছেলে পড়াশোনা এভাবেই একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। এরপর একই কলেজে ভর্তি হতে চান দু’জনে। একই বিষয় নিতে চান পড়ার জন্য। আর রিভিউয়ের ফলাফল যদি ভাল না হয় তাহলে আবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবেন বলরাম। বাবাকে এবার আরও বেশি করে পড়াশোনাতে সাহায্য করতে চান বিক্রমও।  

বিডি-প্রতিদিন/ ৩১ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৩



এই পাতার আরো খবর