ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

এবার তৈরি হচ্ছে ঝিঁঝিঁ পোকা দিয়ে পিৎজা
অনলাইন ডেস্ক

পরিবেশের উপর মাংসের কুপ্রভাব ও বেড়ে চলা জনসংখ্যার প্রোটিনের চাহিদার সমাধানসূত্র হিসেবে পোকার কদর বেড়ে চলেছে। ইতালিতে ঝিঁঝিঁর ময়দা মিশিয়ে পিৎজা তৈরির চেষ্টা চলছে।

এক খামারে হাজার হাজার ঝিঁঝিঁ পোকা পালন করা হচ্ছে। সেগুলি পিৎজার টপিং হিসেবে শোভা পাবে। কারো কাছে সেটা একটা দুঃস্বপ্ন মনে হলেও কার্লো দেল বুয়োনো ও জোসে চানির মতে, সেই ব্যবসার ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। নিউট্রিইনসেক্ট ক্রিকেট ফার্মের চানি বলেন, ‘এই ঝিঁঝিঁ পোকাগুলির আজই জন্ম হয়েছে। জীবনের প্রথম দিন! প্রথম তিন বছরের গবেষণার ফল হিসেবে আমরা প্রতিটি প্লাস্টিকের আঁধারের জন্য ঝিঁঝিঁ পোকার নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ণয় করতে পেরেছি। কারণ পোকাগুলি জীবনের প্রথম থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই থাকবে।’

ইতালির কেন্দ্রভাগে মন্টেকাসিয়ানোয় এক পুরানো গুদামে জোসে চানি এক বন্ধুর সঙ্গে নিউট্রিইনসেক্ট নামের স্টার্টআপ কোম্পানি খুলেছেন। জার্মানি থেকে ১০,০০০ ঝিঁঝিঁ পোকা আমদানির মাধ্যমে সেই অ্যাডভেঞ্চার শুরু হয়েছিল। সেটাই ছিল বিদেশ থেকে প্রথম এবং শেষ আমদানি। তখন থেকেই ক্রিকেট ব্রিডিং প্রক্রিয়া চলছে। জোসে চানি বলেন, ‘এই আঁধারে প্রায় দশ হাজার ঝিঁঝিঁ পোকা রয়েছে। অর্থাৎ সেটা দিয়ে আমরা এক কেজি ঝিঁঝিঁ পোকা ময়দা তৈরি করবো। তার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রোটিন। প্রতি কেজি ঝিঁঝিঁ পোকার জন্য মাত্র পাঁচ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। মনে রাখতে হবে, এক কেজি গরুর মাংসের জন্য পনেরো লিটার পানি লাগে।

জোসের মতে, এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম চালানো হচ্ছে। তিনি মাসে দুই টন ক্রিকেট ফ্লাওয়ার উৎপাদন করেন। চলতি বছরের শুরুতেই ইতালি মানুষের খাদ্য হিসেবে ঝিঁঝিঁ পোকার ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এরই মধ্যে চানি অর্ডারের চাপ সামলাতে পারছেন না।

এই পোকার আয়ু ৩০ দিনের মতো। সেই প্রাণীর ঘুমিয়ে পড়া ও মারা যাওয়া পর্যন্ত এক রেফ্রিজরাটর যন্ত্রে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমানো হয়। ব্যবসায়ী হিসেবে চানির দাবি, এর ফলে পোকাগুলি বিনা যন্ত্রণায় মারা যায়।

কাছেরই এক কোম্পানি সেই পোকা গুঁড়া করে ময়দায় রূপান্তরিত করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই ধূসর পাউডার কি ইতালির রন্ধনপ্রণালীর পবিত্র জগতে প্রবেশ করতে পারবে? শুরুতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার আশা করা হচ্ছে।

রোমের উপকণ্ঠে নিজের পিৎসেরিয়ায় কার্লো দেল বুয়োনো এমন ঝিঁঝিঁ পিৎজা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। প্রচলিত পিৎজার মণ্ডে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ক্রিকেট ফ্লাওয়ার যোগ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। হাতেনাতে সেই প্রক্রিয়া দেখিয়ে কার্লো বলেন, ‘এবার আমি ময়দার তাল বেলে নিয়ে তার উপর আমাদের ঝিঁঝিঁ পোকা ছড়িয়ে দিচ্ছি। প্রচলিত ডো-এর সঙ্গে ভালোভাবে যাতে মেশে, তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমরা সবজি ও একটু মোৎসারেলা চিজ দিয়ে একটা পিৎজা তৈরি করছি।

টমেটো সস, মোৎসারেলা ও নানা ধরনের সবজি এবং অল্প ঝিঁঝিঁ পোকা পাউডার। এখনো সেই উপকরণ বেশ দামী। কারণ এক কেজি ঝিঁঝিঁ পোকা ফ্লাওয়ারের দাম ৬০ ইউরো। অর্থাৎ এর বৃহত্তর ব্যবহারের জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর