ঢাকা, রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সবুজ হচ্ছে শ্বেত মহাদেশ নামে পরিচিত অ্যান্টার্কটিকা
অনলাইন ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি

অ্যান্টার্কটিকা, যা বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত শ্বেত মহাদেশ নামে। বরফে ঢাকা মহাদেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সেখানে কিছু কিছু জায়গায় ঠান্ডার তীব্রতা এতটাই বেশি যে, ওই সব স্থানে কোনও প্রাণীরও অস্তিত্বও নেই। তবে সেই বরফাচ্ছাদিত অ্যান্টার্কটিকাও ক্রমেই সবুজ হয়ে উঠছে। 

সম্প্রতি এক গবষণায় উঠে এসেছে এই চমকপ্রদ তথ্য।

গত ৪০ বছরে মহাদেশটিতে গাছপালার সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি। অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ করে এ গবেষণাটি করেছেন ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের বিজ্ঞানীরা। 

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।

১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকায় উদ্ভিদ ছিল মোট এক বর্গ কিলোমিটারেরও কম। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১২ বর্গ কিলোমিটারে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রবণতা আরও বাড়ছে, বিশেষ করে ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সবুজায়ন বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। 

এই গবেষণার সহ-লেখক ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের অধ্যাপক ড. টমাস রোল্যান্ড বলেন, “অ্যান্টার্কটিকায় যে ধরনের উদ্ভিদ দেখা যায় তার বেশিরভাগই শ্যাওলা। পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে বেড়ে উঠেছে এগুলো। এখনও প্রায় সম্পূর্ণভাবে তুষার, বরফ ও শিলায় আবৃত অ্যান্টার্কটিকার ক্ষুদ্র অংশে বেড়ে উঠেছিল উদ্ভিদের জীবন। তবে এই ক্ষুদ্র অংশটি নাটকীয়ভাবে বেড়ে উঠেছে, যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, অ্যান্টার্কটিক মহাদেশের মতো বিশাল ও বিচ্ছিন্ন প্রান্তরেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে।

শিল্পবিপ্লবের পর থেকে বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে দ্বিগুণ উষ্ণ হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন মেরু অঞ্চল। দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণতম প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থিত পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার কাছাকাছি অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপটি, যেখানে বিশ শতকের শেষার্ধে দক্ষিণ গোলার্ধের অন্য যেকোনও জায়গার তুলনায় উষ্ণতা বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এসব বাস্তুসংস্থান আরও বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ও জলবায়ু এভাবেই উষ্ণ হতে থাকলে সম্ভবত অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের সবুজায়নের পরিমাণ বাড়বে, বলেছেন ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারের অধ্যাপক ও সহ-লেখক ড. অলি বার্টলেট।

অ্যান্টার্কটিকার মাটি বেশিরভাগই খারাপ মানের। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, উদ্ভিদের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলে সেখানকার মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ হবে, যা মাটির মানকে আরও ভালো করবে। ফলে সম্ভবত আরও সহজ হবে অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে অন্যান্য গাছপালা জন্মানোর পথ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে উষ্ণায়নের কারণে এই বিশেষ অঞ্চলের জীব এবং প্রকৃতির মৌলিক পরিবর্তনও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান

বিডি প্রতিদিন/একেএ



এই পাতার আরো খবর