ঢাকা, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে পৌরসভা নির্বাচন
কাউন্সিলর পদে ‘গ্যাঁড়াকলে’ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা
সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সংরক্ষিত ও সাধারণ আসনে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি পৌর নির্বাচনে ভোট পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে রীতিমতো ‘গ্যাঁড়াকলে’ পড়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। কাউন্সিলর পদে দলের একক প্রার্থী না থাকলেও সংরক্ষিত ও সাধারণ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একের অধিক প্রার্থী হওয়া, তৃনমূলের রাজনীতির দ্বন্দ্বসহ নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রার্থীরা। 

এতে বিএনপির সংরক্ষিত ও সাধারণ আসনে একক প্রার্থী থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন তারা। তবে সবকিছু বিবেচনা করেই যোগ্য, ত্যাগী ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে সাধারণ মানুষের কাছে থাকবেন এমন নেতা নির্বাচিত হবেন সেই প্রত্যাশা ভোটারদের। 

আগামী সোমবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভায় প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমেই ভোট দিবেন ভোটাররা। তবে নির্বাচন কমিশন সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডে তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র বদিউল আলম, বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবুল মনছুর ও সম্মিলিত নাগরিক কমিটির ব্যানারে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন মো. জহিরুল ইসলাম। তিন মেয়র প্রার্থীসহ মোট ৮৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

তিনটি সংরক্ষিত ও ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে সংরক্ষিত আসনে ১৩ জন ও কাউন্সিলর পদে ৭১ জন নির্বাচন করছেন। এদের মধ্যে সংরক্ষিত ১ নং ওয়ার্ডে-৫ জন, ২ নং ওয়ার্ডে-৫ জন ও ৩ নং ওয়ার্ডে-৩জন নির্বাচন করছেন। একই সঙ্গে ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছেন ১ নং ওয়ার্ডে ৮জন, ২ নং ওয়ার্ডে-৬ জন, ৩ নং ওয়ার্ডে-৬ জন, ৪ নং ওয়ার্ডে-৬ জন, ৫ নং ওয়ার্ডে-৯ জন, ৬ নং ওয়ার্ডে-৭ জন, ৭ নং ওয়ার্ডে-৬ জন, ৮ নং ওয়ার্ডে-১১ জন, এবং ৯ নং ওয়ার্ডে-১২ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। এদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত একক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

এখানে ১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সীতাকুণ্ড পৌরসভার হালনাগাদ ভোটার রয়েছেন মোট ৩৪ হাজার ৮১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৮২৭ জন। ভোটগ্রহণ হবে মোট ১৭টি কেন্দ্রে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী প্রার্থী বলেন, মেয়র পদে দলের একক প্রার্থী হলেও কাউন্সিল পদে প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। ফলে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হবেই। সাধারণ মানুষ যোগ্য প্রার্থীর পাশাপাশি দলীয় নেতা হিসেবে কর্মী-ভোটাররা কাকে ভোট দিবেন, সেই চিন্তা এখন সকলের মাঝে। সীতাকুণ্ড সহ জেলার শীর্ষ নেতাদের সমর্থিত প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। অন্যদিকে প্রতি ওয়ার্ডেই রয়েছেন বিএনপির একক প্রার্থী। সবমিলে রীতিমতো নির্বাচনী ‘গ্যাঁড়াকলে’ পড়েছেন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

৪নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী মিঠু বলেন, ভোটাররা সবকিছু বুঝেন এবং জানেন। কাকে এবং কেমন প্রার্থীদের ভোট দিলে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি নানাবিধ সমস্যা দূর হবে। তাই যোগ্যতার বিবেচনা করেই প্রার্থীদের ভোট দিবেন ভোটাররা। 

বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও সাধারণ মানুষ কাজে বিশ্বাস করেন। তাই বেশী প্রার্থীর মধ্যেও সাধারণ মানুষের সেই যোগ্য প্রার্থীকে চিনতে ভুলবেন না সেই প্রত্যাশায় করছি। তিনি বলেন, উন্নয়নের পাশাপাশি গরীব-সাধারণ মানুষের পাশে থেকে আরও বেশী কাজ করতে চাই। এতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ হলেই নির্বাচিত হবেন বলে জানান তিনি।

বিএনপি সমর্থিত একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, মামলা, হামলাসহ নানাবিধ হয়রানীর শিকার হয়ে আসছি প্রতিনিয়ত। বিএনপির প্রার্থীদের বেশ কয়েকটি করে মামলাও রয়েছে। তবুও সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে নির্বাচন করছি। দেশে বিভিন্ন সময় ভোটের কারচুপির মতো সীতাকুণ্ডেও তেমন কিছু না হয় এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাররা ভোট দিতে পারলেই প্রকৃত জনগণের সেবক নির্বাচিত হবেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, সীতাকুণ্ডে প্রথমবারের মতো ইভিএম ভোট কিভাবে দিবেন সেই বিষয়ে ভোটারদের উৎসাহ এবং আগ্রহী হিসেবে গড়ে তুলতে নানাভাবে প্রচারণা চলছে। শনিবার থেকে মক ভোট শুরু হয়েছে। এর আগে নির্বাচনী দায়িত্বের জন্য ৩২০ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাছাড়া ২১৬টি ইভিএম মেশিন নির্বাচনী এলাকায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর



এই পাতার আরো খবর