ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন
শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের দৌঁড়ঝাপ, লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি
ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের প্রচার বেড়েছে। রাত-দিন নির্বাচনের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা। শহর এলাকাসহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় চলছে পাল্লা দিয়ে মাইকিং। পোস্টারে পোস্টারে সাজ সাজ রব এখন রাঙামাটিতে। 

এরই মধ্যে বইছে ভোটের হওয়া। পাড়া, মহল্লা, বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গুলোতে চলছে প্রার্থীদের সমাবেশ। প্রচারে পিছিয়ে নেই কোন প্রার্থী। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের কোন প্রার্থী এবার পৌরসভা নির্বাচনে অংশ না নেওয়া হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী মধ্যে। রাজপথ থেকে চায়ের দোকানেও ঝড় তুলেছে পৌরসভা নির্বাচন। চার দিকে আলোচনায় উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপথ। গণসংযোগ, সমাবেশ ও উঠান বৈঠক। 

অন্যদিকে প্রস্তুত করা হচ্ছে রাঙামাটি ৯টি ওয়ার্ডের ৩১টি ভোট কেন্দ্র। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা জুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। যেকোনো নাশকতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রার্থীরা পাহাড়ের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের রাঙামাটি মেয়র প্রার্থী মো. আকবর হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনো সরকার আগ্রহ দেখায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারই পাহাড়ের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পাহাড়ের মানুষকে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহবান জানান তিনি। 

তবে প্রতিশ্রুতি দিতে পিছিয়ে নেই বিএনপি প্রার্থীও। বিএনপি’র রাঙামাটি মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ বলেছেন, দল বা ক্ষমতা দেখে ভোট দিলে কি আসলে উন্নয়ন হয়? বিগত ৫ বছর পৌর এলাকায় কি উন্নয়ন হয়েছে তা এখন দৃশ্যমান। রাঙামাটি-বাসী উল্লেখযোগ্য তেমন কোন উন্নয়নের সুফল ভোগ করেনি। এক ব্যক্তি বার বার ক্ষমতায় থাকলেও নিজের উন্নয়নে  ব্যস্ত থাকেন। রাঙামাটি পৌর এলাকায় উন্নয়ন করতে হলে অবশ্যই ধানের শীষে বিকল্প নেই। তিনিও রাঙামাটির পৌর বাসিকে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। 

অন্যদিকে বিএনপিতে একক প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীও। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন চৌধুরীর (নৌকা) সাথে পাল্লা দিয়েছে একই দলের অন্য প্রার্থী অমর কুমার দাশ তার প্রতীক (মোবাইল)। যদিও দল থেকে এরই মধ্যে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু শঙ্কার কালো মেঘ রয়ে গেছে। সবাই ব্যস্ত প্রচার-প্রচারণায়।

থেমে নেই বাকি দুই মেয়র প্রার্থীও। জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী প্রজেশ চাকমা, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির (কোদাল) প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মান্নান রানাও এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা গণ সংযোগে মাঠে। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে পুরোদমে প্রচারণা কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন তারা ।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চায় রাঙামাটি বাসীকে। তাই কোন রকম বিশৃঙ্খলা মেনে নেওয়া হবে না। মানুষ যাতে সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, রাঙামাটি পৌরসভায় এবার নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ মেয়র পদে ৫জন। এছাড়া তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৯জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪১ প্রার্থী। এবার রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে ৬২ হাজার ৮৮৪ ভোটার রয়েছেন। এ মধ্যে পুরুষ ৩৪ হাজার ২৫২ এবং নারী ২৮ হাজার ৬৩২ জন।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর



এই পাতার আরো খবর