ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শহীদ মিনারে ছয় স্তরের নিরাপত্তা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

অমর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। মূলবেদিসহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যবর্ধন, ধোয়ামোছা ও নতুন করে রং করার কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন চলছে আলপনা আঁকার কাজ।

দিবসটিকে সামনে রেখে শহীদ মিনার এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে মোট ছয় স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ-ডিবি টিম, র‌্যাব ও সোয়াত।

এদিকে, গতকাল বিকালে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ উদ্যাপনের সার্বিক প্রস্তুতি সরেজমিন দেখতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সার্বিক প্রস্তুতি দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আশপাশ এলাকার আবাসিক হোটেল ও মেসে গতকাল রাত থেকে তলাশি শুরু করেছে ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগ। দুষ্কৃতকারীরা যেন নাশকতামূলক কোনো কাজ করতে না পারে, সে জন্য এ তলাশি চালানোর কথা আগেই জানানো হয়। 

এর আগে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সকালে শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, শহীদ মিনারের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় ছয়টি ইউনিটে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। যেখানে থাকবে পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডিবি টিম, র‌্যাব ও সোয়াত। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে আলাদা নিরাপত্তা নেওয়া হবে। তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন ধাপে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শহীদ মিনারকে কেন্দ্র করে চারদিকের প্রত্যেকটি রাস্তায় পুলিশের আলাদা চেকপোস্ট রাখা হবে। চেকপোস্টের ভিতরে ও বাইরের এলাকা সম্পূর্ণ সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। যারা পলাশী মোড় হয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসবেন তাদের তল্লাশির মাধ্যমে আসতে দেওয়া হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যও আলাদা করে জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রদ্ধা নিবেদনে আসা সবাইকে যথাযথ রুটম্যাপ অনুসরণ করে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। শহীদ মিনার এলাকাজুড়ে কোনো হকার কিংবা রাজনৈতিক ব্যানার-ফেস্টুন থাকবে না। বিদেশি রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক যারা শ্রদ্ধা নিবেদনে আসবেন তাদের জন্য জিমনেসিয়াম এলাকায় আলাদা করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে বলে উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার। করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে যথাযথ সচেতনতার সঙ্গে শহীদ মিনারে আসার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি : দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে সীমিত পরিসরে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি প্রভাতফেরি বের করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেবেন। প্রভাতফেরি সহকারে তারা আজিমপুর কবরস্থান হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাবেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এ ছাড়া, বাদ জোহর বা সুবিধাজনক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদুল জামিয়া, সব হলের মসজিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর