ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রেলপথে ৭ মাসে ১০৫২ দুর্ঘটনায় নিহত ১৭৮
অনলাইন ডেস্ক
শুক্রবার চট্টগ্রামে ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় ১১ জন পর্যটক নিহত হন। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের ভিড়

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়ায় রেলক্রসিংয়ে গতকাল শুক্রবার মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হন। এ নিয়ে দেশের রেলপথে দুর্ঘটনায় গত ৭ মাসে নিহতের সংখ্যা হলো ১৭৮ জন। এই সময়ে ছোট-বড় ১ হাজার ৫২টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ‘সেভ দ্য রোড’।  ২৪টি জাতীয় দৈনিক, ১৮টি ইলেকট্রনিকস মিডিয়া, ২২টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং সারাদেশে সেভ দ্য রোডের স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করেছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের রেলপথে ২ হাজার ৮৫৬টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ ১ হাজার ৩৬১টি। অর্থাৎ প্রায় ৪৮ শতাংশই রেলক্রসিং অবৈধ। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ৩৩টি ক্রসিং কে বা কারা ব্যবহার করছে, তা কেউ জানে না। এ ছাড়া বৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে ৬৩২টিতে গেটকিপার নেই। অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোতে নেই কোনো সুরক্ষা সরঞ্জামও। ক্রসিংয়ের গেটকিপারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এতে আরও বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। এতে আহত হয়েছেন ৫২ জন এবং মারা গেছেন ১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪১টি। এতে আহত হয়েছেন ১১১ জন এবং নিহত হয়েছেন ২৭ জন।

১-২৮ মার্চ পর্যন্ত রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২২টি। এতে আহত হয়েছেন ১৮৬ জন এবং নিহত হয়েছেন ৩১ জন। ১-৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১২টি। এতে আহত হয়েছেন ১৬৬ জন এবং নিহত হন ৪২ জন।

মে মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২২১ জন এবং নিহত হয়েছেন ২৩ জন। এ মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২টি। জুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭টি। এতে আহত হয়েছেন ১৭২জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন। জুলাই মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪২টি। এ মাসে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৩২ জন এবং নিহত হয়েছেন ২৪ জন।

সেভ দ্য রোড দাবি, রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর আহতদের সরকারি অর্থায়নে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

একইসঙ্গে রেলওয়ের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তোরণে সেভ দ্য রোডের পক্ষ থেকে সাতটি সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হচ্ছে-

১. অবৈধ ক্রসিংগুলোর সমাধান করা।

২. দুর্নীতিবাজ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।

৩. সরকারি লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগ’-এর নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে রেলকে গণমুখী বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করা।

৪. যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ রেলওয়েকে বেসরকারি খাত থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধায়নে পরিচালনার সুপরিকল্পিত উদ্যেগ গ্রহণ করা।

৫. সচিব-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের আরাম-আয়েশ বাতিল করে সারাদেশে রেলওয়ের উন্নয়নে নিবেদিত থাকা।

৬. যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে সব কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং সারাদেশের সব স্থানে কার্যকর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা।

৭. প্রতি তিন কিলোমিটারে পর্যবেক্ষণ করার জন্য রেলওয়ে পুলিশের বিশেষ বুথ স্থাপন করা।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 



এই পাতার আরো খবর