ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

‘বোবা ছাগল’ চিহ্নিত করার আগেই দুর্নীতিবাজ ধরতে হবে: বাহাউদ্দিন নাছিম
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম, এমনকি রাজনীতিবিদরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে চিহ্নিত করতে না পারলো না। তাকে চিহ্নিত করলো একটি বোবা প্রাণি ছাগল। এমন মতিউর আরও আছে কি না খতিয়ে দেখতে হবে। ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোনো বোবা প্রাণি তাদের চিহ্নিত করার আগেই যেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো চিহ্নিত করতে পারে। 

আজ বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

বাহাউদ্দিন নাছিম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ায় পেশাজীবী অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সমালোচনা করে বলেন, বিবৃতির মাধ্যমে কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিচ্ছে। কোনো রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে রাজনীতিবিদরা তার পক্ষ নেয় না। বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। কিন্তু যখন কোনো সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে; তখন ওই গোষ্ঠি বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা বা বিবৃতি দেয়। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় পুরো সংস্থার ওপর চলে আসে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, তারা যেন বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিয়ে প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তিকে রক্ষার নামে তাদের সংস্থার সকলের ওপর দায়ভার না চাপায়, সেদিকে সকলের সজাগ থাকা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পুলিশের সাবেক একাধিক কর্মকর্তার দুর্নীতির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেয় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। অপরদিকে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিপুল অর্থবিত্তের খবর বেরিয়ে আসে তার ছেলের কোরবানির ঈদে ১২ লাখ টাকা দিয়ে এক ছাগল কেনাকে কেন্দ্র করে।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। অনেকেই বলেন এর চেয়ে বহুগুণ বেশি। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে ঋণ খেলাপি কমাতে হবে। ঋণ খেলাপি, অর্থপাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে তাদের তালিকা জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে আইন করে, বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশকে, দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। 

দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সে সরকারি হোক বা বেসরকারি, যে কোনো দলের বা সংস্থার হোক না কেন, কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর