ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অস্ত্র উদ্ধারে চলছে সাঁড়াশি অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে নাশকতায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান। গত রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং গান পাউডার সরবরাহকারীদের গ্রেফতারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এবং মাঠ পর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাশকতাকারীদের শেকড় খুঁজতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে একাধিক সংস্থা। তবে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জবানি থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসায় তালিকা তৈরিতে অনেক গতি পেয়েছে। তালিকায় উঠে আসা ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে তাদের সম্ভাব্য গতিবিধি এবং অবস্থানের ইউনিটগুলোকে। 

পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি) আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আন্দোলনের নাম করে নাশকতায় অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই। সে যেই হোক না কেন। এসব দুর্বৃত্তকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়ে পুলিশের সব ইউনিটকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারা অস্ত্র-গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিল, কীভাবে এগুলো তাদের হাতে এসেছিল বিস্তারিত খুঁজে বের করা হবে। দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয় সবকিছুই করবে পুলিশ।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর শনিরআখড়া, কাঁচপুর, রামপুরা, কুড়িল বিশ্বরোড, উত্তরা-৭ নম্বর সেক্টর, উত্তরা আজমপুর, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১, বাড্ডা, নতুনবাজার, মোহাম্মদপুর এবং টঙ্গী এলাকায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন উড়িয়ে নাশকতার ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল বিভিন্ন সংস্থা। এর বাইরে হেলিকপ্টার এবং বিভিন্ন স্থাপনায় স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলো নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। ফুটেজে আসা ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হতেও নেওয়া হচ্ছে একাধিক সংস্থা এবং প্রযুক্তির সহায়তা। এরপরই তাদের নাম উঠছে তালিকায়। রাজধানীর বাইরে মাঠ পর্যায়ের তালিকা ঘিরেও চলছে অভিযান। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আন্দোলন চলাকালীন সময় এবং এর কিছুদিন আগে ঢাকায় অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিষয়ে নিশ্চিত হতে আবাসিক হোটেলের নথিপত্র ঘেঁটে দেখছেন গোয়েন্দারা। এর বাইরেও ঢাকার মোবাইল নেটওয়ার্কে নতুন করে যুক্ত হওয়া সিমগুলোকেও সন্দেহজনক তালিকায় রাখা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে এবং চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এবং মুরাদপুরের নাশকতায় অংশ নেওয়া অস্ত্রধারীর বিষয়েও কাজ চলছে। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নাশকতায় জড়িত থাকা সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। এর ভিত্তিতে অভিযান ও চলছে। 

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিসংযোগে গানপাউডার কারা কোত্থেকে সরবরাহ করেছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়েও আমরা বেশকিছু তথ্য পেয়েছি। তবে যারাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সে  যেই হোক না কেন!

র‌্যাব বলছে, গত মার্চ মাসে বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার অস্ত্র তৈরির কারিকর মোখলেছুর রহমান সাগর অনেক সন্ত্রাসীর কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছিল। একই ঘটনায় গ্রেপ্তার তানভীর পেশায় একজন লেজার সিএনসি ডিজাইনার ছিলেন। লেজার সিএনসি ডিজাইনার হওয়ায় তিনি যে কোনো কিছু কম্পিউটারে টু-ডি নকশা অনুযায়ী অত্যন্ত সূ²ভাবে কাটিং করার সক্ষমতা অর্জন করেন। তানভীরের দেওয়া নকশা অনুযায়ী সাগর বিভিন্ন অস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরি করতেন। সাগর ও তানভীর অস্ত্র তৈরি করে সেগুলো অনীক ও সৈকতের কাছে হস্তান্তর করতেন। পরে অনীক ও সৈকত এসব অস্ত্র বিভিন্ন ক্রেতার কাছে বিক্রি করতেন।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর