ঢাকা, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ভাষা আন্দোলনে যশোরের ভূমিকা ও ভাষাসৈনিক হামিদা রহমান
আনোয়ারা সৈয়দ হক

বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে গৌরবের একটি অর্জন। শুধু অর্জন বললে ভুল হবে, বস্তুত বাহান্নোর ভাষা আন্দোলনের ভিতর দিয়ে তদানীন্তন পূর্বপাকিস্তান একটি ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ থেকে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে উত্তীর্ণ হয়। এর আগ পর্যন্ত শুধু তর্কবিতর্ক চলছিল, বিভিন্ন জনের বিভিন্ন প্রকারের মতবাদ এবং সেসব মতবাদ নিয়ে আরও তর্কবিতর্ক লাগাতার এসব লেগেই ছিল। সেই সময় শিক্ষিত বাঙালির ভিতরেও গাদ্দারের সংখ্যা কম ছিল না যারা নিজের মাতৃভাষাকে নানা প্রকারে অবমাননা ও বিকৃত করে তাকে তার মৌলভাষারূপ থেকে বিচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে মেতে ছিল। উনিশশো সাতচল্লিশ সালে দেশভাগের পর থেকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, এ নিয়ে সারা পাকিস্তানজুড়ে পাকিস্তান সরকারের পদলেহী চামচারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।  সেই পরিপ্রেক্ষিতে উনিশশো আটচল্লিশ সালেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলায় আন্দোলন শুরু হয় এবং সে কারণে এখনো আমাদের মাতৃভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ভূমিকা সত্যিই খুব গৌরবের সঙ্গে স্মরণ করতে হয়।

ভারত ভাগের প্রাক্কালেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, তা নিয়ে শুরু হয় তর্কবিতর্ক। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ ভারত ভাগের পর থেকেই বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। উনিশশো আটচল্লিশ সালের তেইশে ফেব্রুয়ারি করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে কুমিল্লার সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি উত্থাপন করেন। সঙ্গে সঙ্গে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান। তিনি বলে বসেন, মিস্টার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত শুধু পূর্ব পাকিস্তানের নয়, সারা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা করতে চাচ্ছেন!

তার গলার স্বর নকল করে পূর্ববঙ্গ বা তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনও বলে বসেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে পারে বলে পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ মানুষের মত! একই স্বরধ্বনি পাওয়া গেল তখনকার মন্ত্রী নূরুল আমিনের কণ্ঠেও। তিনি সঙ্গে সঙ্গে খাজা নাজিমুদ্দিনের উক্তি সমর্থন করে বসলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ধীরেন্দ্রনাথের আনা প্রস্তাবটি পঁচিশে ফেব্রুয়ারি বাতিল ঘোষণা করা হলো।  এ খবর রেডিওতে প্রচার হলে ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার ছাত্ররা ধর্মঘট পালন করে।

যশোর এক্ষেত্রে এক বিরাট সংগ্রামী ভূমিকা পালন করে। যশোরের সংগ্রামী ছাত্রসমাজ মার্চ মাসের আগেই গঠন করেন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এ সময় কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ঘটেনি। যা কিছু প্রাথমিক অবস্থায় তারা করেছিলেন সব ছিল তাদের স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব এবং ভাষার প্রতি তাদের দায়বোধ। দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটা, দেয়ালে কালি দিয়ে লেখা, নিজেদের ভিতরে জোর আলাপ-আলোচনা, এসবের ভিতরে তাদের কর্মপন্থা নিয়োজিত ছিল।

এই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সাহায্য ছাড়াই দোসরা মার্চ যশোরের বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী মাইকেল মধুসূদন কলেজে (এমএম কলেজ) ছাত্রধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তারা এ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সাহায্য প্রার্থনা করলেও একমাত্র কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া কোনো পার্টি এগিয়ে আসেনি। এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তারা সেই মুহূর্তে ততটা সফল হতে পারেননি। কিন্তু পাকিস্তান সরকার থেমে থাকেনি। তারা ছাত্রদের এই হরতাল বানচাল করার জন্য চেষ্টা চালায়।

যদিও তাদের সে চেষ্টা বিফল হয়। দোসরা মার্চ উনিশশো আটচল্লিশ সালে মাইকেল মধুসূদন কলেজে পূর্ণ ধর্মঘট পালন করে।

এরপর এগারোই মার্চ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দেশব্যাপী ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেন। যশোরের ছাত্র সমাজও এই আহ্বানে আন্দোলিত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এ ব্যাপারে বিপুল সাড়া দেয়।

কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান সরকারও ছাত্রদের এই ধর্মঘট বানচাল করার জন্য যাবতীয় সাবধানতা গ্রহণ করে। যশোরের তদানীন্তন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মিস্টার নোমানি ছাত্রদের ধর্মঘট বানচাল করার জন্য একশো চুয়াল্লিশ ধারা জারি করেন।

কিন্তু এতসব বৈরিতা সত্ত্বেও যশোর এমএম কলেজে অগণিত ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে এবং সমাহারে পূর্ণ ছাত্রধর্মঘট পালিত হয়। বলাবাহুল্য, একশো চুয়াল্লিশ ধারা ভঙ্গ করেই তারা ধর্মঘট পালন করেন। যে ধর্মঘট এমএম কলেজের ক্যাম্পাসে শুরু হয়, সেই ধর্মঘট ক্রমে ক্রমে শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়, শহরের সাধারণ মানুষ তাতে যোগদান করতে থাকেন। এমনকি যশোর শহরের রাজনৈতিক নেতা অ্যাডভোকেট মশিয়ুর রহমান, যিনি প্রথমে একশো চুয়াল্লিশ ধারা ভেঙে মিছিল না করার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, তিনিও ছাত্রদের মিছিল রাস্তায় উঠে আসতে দেখে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই বলে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। তার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু আইনজীবী সেই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। সেদিন পাকিস্তানের ধামাধরা পুলিশ যশোরের চৌদ্দজন নেতাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। এই চৌদ্দজন মানুষের নাম এখানে অবশ্যই স্মর্তব্য। তারা হলেন— অ্যাডভোকেট মশিয়ুর রহমান, রণজিত্ কুমার মিত্র, কাজি আবদুর রকীব, ঈমান আলি, এসএইচ জিন্নাহ, পবিত্রকুমার ধর, হাবিবুর রহমান, রবিকুমার সাহা (পিপলস রেডিও দোকানের মালিক, যাকে আমি রবিকাকা বলে ছেলেবেলায় ডাকতাম), লুত্ফর রহমান, আমিনুল ইসলাম, গোলাম মোর্তজা চ্যাণ্ঠা, অনন্ত মিত্র, সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আবদুর রহমান।

এসব রাজনৈতিক নেতা এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা গ্রেফতার হলে তাদের দাবিতে বিকাল বেলা আবার মিছিল বের হয়। মিছিল চলাকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পেটোয়া বাহিনী অর্থাত্ পুলিশ বাহিনী মিছিলে চড়াও হয়ে বেপরোয়াভাবে লাঠিচার্জ করে। পুলিশের অহেতুক অত্যাচারে যাশোরবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শহরের সমস্ত দোকানদার এই অত্যাচারের প্রতিবাদে তাদের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। কিন্তু পুলিশের ধড়পাকড় চলতে থাকে। এ সময় আরও তেইশজনের মতো ছাত্র এবং ভাষা আন্দোলনের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের এরকম অহেতুক আক্রমণের প্রতিবাদে ছাত্ররা আবার বারোই মার্চ এমএম কলেজ প্রাঙ্গণে পূর্ণ ধর্মঘট পালন করেন এবং পরদিন অর্থাত্ তেরোই মার্চ সারা শহরে হরতাল পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উনিশশো আটচল্লিশ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যশোরের তেরোই মার্চের হরতাল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য। এদিন শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সকাল থেকে সাইকেলে মধুসূদন কলেজের প্রাঙ্গণে সমাবেত হতে থাকে। বেলা আনুমানিক দশটার দিকে মিছিল যখন শহর প্রদক্ষিণ করছিল তখন অসংখ্য পথচারী, খেটে খাওয়া মানুষ, অসংখ্য দোকানদার, রিকশাওয়ালা, মুটে মজুর মিছিলে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। মিছিল যত কালেকটরেট ভবনের দিকে এগোতে থাকে ততই জনতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

মিছিলে কিছু কিছু জনতা ও ছাত্র যখন কালেকটরেট ভবনের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে, তখন দিশেহারা পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে গুলিবর্ষণ শুরু করে। গুলিবর্ষণ করলে জনতা হতভম্ব হয়ে যায়। এরকম কোনো সহিংস আক্রমণ তারা ধারণা করতে পারেনি। জনতা এরপর ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশের এরকম বর্বর আক্রমণে সেদিন সারা যশোরবাসী ক্রোধে ফেটে পড়ে। উত্তেজিত জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এদিকে পুলিশ মিছিলকারীদের গ্রেফতার করার জন্য শহরের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালায়। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের বিপদ ঘনায় বেশি। শুনলে এখন আশ্চর্য বোধ হতে পারে যে সেদিন যশোর শহরের ঝালাই পট্টির পতিতাপল্লীর মেয়েরাও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রায় চল্লিশজন ছাত্রকে তাদের ঘরের ভিতরে গোপনে আশ্রয় দিয়ে বাইরে থেকে দরজায় তালাবন্ধ করে রাখেন। এর ফলে সেসব ছাত্র গ্রেফতার এড়াতে সেদিন সক্ষম হয়। তবুও শেষ রক্ষা হয় না। কারণ পুলিশের অত্যাচারে এই তারিখে প্রায় দুশো ছাত্র ও জনগণ আহত হয়েছিলেন। কিন্তু জিহাদি জনতাকে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। পরদিন আবার হরতাল আহ্বান করা হয় এবং তা যথারীতি পালন করা হয়। এরপর যখন আঠারোই মার্চ রাজবন্দী মুক্তি দিবস পালন করার প্রস্তুতি চলছিল এবং ছাত্ররা যখন মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেই সময় যশোরে বসবাসরত বিহারিরা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাঙালিদের ওপর আকস্মিকভাবে আক্রমণ শুরু করল। এতে বেশ কিছু বাঙালির প্রাণহানি ঘটল। এর পেছনে সেদিন ইন্ধন জুগিয়েছিল ঘরশত্রু বিভীষণ মুসলিম লীগ।

মুসলিম লীগ চেষ্টা করেছিল ঘটনাটা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য। বাঙালি ও অবাঙালিদের ভিতরে রায়ট সৃষ্টি করা ছিল তাদের গোপন উদ্দেশ্য, কিছু না হলেও অন্তত হিন্দু মুসলমানে রায়ট হলেও তারা খুশি হতো। এ ব্যাপারে অবাঙালি ম্যাজিস্ট্রেট মিস্টার নোমানি এবং পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতা ছিল অবিশ্বাস্য রকমের সত্য।

এ খবর লোক মারফত ছাত্রদের কাছে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল। সেদিন তারা এক বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের প্রোগ্রাম বাতিল করেন। ফলে যশোর শহর সেদিন ভয়াবহ এক দাঙ্গার হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু তবুও আন্দোলন থেমে যায় না। সেদিন দুপুরেই শহরে বের হয় দাঙ্গা প্রতিরোধ মিছিল। তারা স্লোগান দিতে দিতে সমস্ত শহর প্রদক্ষিণ করে।

যশোরের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এরপর আইন পরিষদের আলোচনা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চুক্তি হয়। এর ফলে সব ছাত্রবন্দীর মুক্তি ঘটে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা দেশপ্রেমিক ও ভাষাপ্রেমিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। পশ্চিম পাকিস্তান এ জন্য এই নেতার প্রতি এতই ক্ষুব্ধ ছিল যে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রাণহরণ করে। এ কথা এখানে উল্লেখ করতে হবে যে, যশোরের এই ভাষা আন্দোলনের মূল নেতৃত্বে ছিলেন যশোরের সংগ্রামী ছাত্রসমাজ এবং পেছন থেকে তাদের সমর্থন দিয়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি, সোস্যালিস্ট রিপাবলিকান পার্টি, কংগ্রেস, ফরোয়ার্ড ব্লক, এমনকি মুসলিম লীগের সোহরাওয়ার্দী সমর্থকরাও।

কিন্তু যশোর থেকে ভাষার বিরুদ্ধে কুত্সা রটনাকারীদেরও অভাব ছিল না। এক্ষেত্রে যিনি সংগ্রামী ভূমিকা রেখে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি একজন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা ভাষাসৈনিক হামিদা রহমান। বিগত এগারোই মার্চ কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ গোটা পূর্ববাংলার শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নিলে যশোর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে। কিন্তু সরকার এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য সেদিন একশো চুয়াল্লিশ ধারা জারি করে।

ছাত্র ফেডারেশনের নেতা হামিদা রহমান এই আইন ভঙ্গের পক্ষে তার জোরালো মতবাদ প্রকাশ করেন। হামিদা রহমান ছিলেন যশোর এমএম কলেজের ছাত্রী। তিনি এগারোই মার্চের হরতালে ছাত্রীদের মিছিলের পুরোভাগে থেকে নেতৃত্ব দেন। পোস্টারিং, দেয়াল লিখন, জ্বালাময়ী বক্তৃতা ইত্যাদিতে তার সক্রিয় অংশ ছিল। তোরোই মার্চের হরতালেও তার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। সরকারের ভাষানীতির প্রতিবাদে তিনি যে প্রবন্ধ লেখেন তা তখনকার কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র স্বাধীনতায় প্রকাশিত হয়েছিল।  শুধু তাই নয়, তার এই লেখনী ছাত্র মহলে নতুন এক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে তার অবদান চিরকালের জন্য যশোরবাসী স্মরণে রাখবে।

     লেখক : কথাসাহিত্যিক।



এই পাতার আরো খবর