ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

করোনা থেকে আমাদের শিক্ষা
আবুল কাশেম হায়দার

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস জীবনমান, অর্থনীতি, সামাজিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এই পরিবর্তন কত দিন পর্যন্ত  স্থায়ী হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে যত দিন বিশ্বজুড়ে করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য না হবে ততদিন পর্যন্ত করোনা সতর্কতা মেনে সকলকে চলতে হবে। নতুবা জীবনের ঝুঁকি থাকবে। জীবন ঝুঁকি থেকে মুক্তির জন্য আমাদের সতর্ক সব সময় থাকতে হবে।

১. করোনা থেকে আমাদের প্রথম শিক্ষা হচ্ছে সর্বশক্তিমান ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ পাক। বিশ্বের পরাশক্তি আজ করোনার নিকট পরাজিত।

২. স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ অনেক বাড়াতে হবে। 

৩. বিশ্বব্যাপী আগামী বছরগুলোতে দেশে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে। যে দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসসম্পূর্ণ থাকবে তাদের প্রবৃদ্ধি ক্রমেই বাড়তে থাকবে। খাদ্য ও কৃষিখাত পণ্য উৎপাদনে তাই বাংলাদেশকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

৪. বৃহৎ শিল্পের পাশাপাশি কুটির শিল্পকে বেশি উৎসাহিত করতে হবে। তৈরি পোশাক শিল্পসহ বস্ত্রখাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তৈরি পোশাকের সঙ্গে যুক্ত স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং স্পিনিং খাতকে সম্পূর্ণ করমুক্ত করতে হবে।

৫. কর্মহীন প্রবাসীদের দক্ষতা অনুযায়ী দেশে ও বিদেশে নতুন করে চাকরির ব্যবস্থার পরিকল্পনা গ্রহণ এখন থেকে গ্রহণ করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে নতুন করে কর্মসংস্থান কমে যাবে। তাই বিদেশে চাহিদা থাকবে কম। তাই বিদেশে অদক্ষ ও দক্ষ শ্রমিক প্রেরণে বহু ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। তবে এখন থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা খুব বেশি করে শুরু করা দরকার। অন্তত যে সকল প্রবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছেন, তাদের যে কোন উপায় ঐ সকল দেশে নতুন বা পুরাতন কর্মে নিয়োগ অব্যাহত রাখার জন্য  বাংলাদেশ সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ  করতে  হবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।  

৬. করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই রোগে সারা বিশ্ব দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় থাকবে। আমাদের দেশের অবস্থাও তাই হবে।

৭. দেশের অর্থনীতিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্প মেয়াদী দু’ধরনের পরিকল্পনা সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। ক্ষুদ্র শিল্প, মাঝারি শিল্প, বৃহৎ শিল্প, শিল্প ছাড়া অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য আলাদা আলাদা কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে সেবা খাতের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। বেসরকারি চিকিৎসা খাত, শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাজেটে সহযোগিতার সুযোগ রাখতে হবে।

৮. সাংবিধানিক সংগঠনগুলোকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি  করতে  হবে। দুর্নীতি, ঘুষ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে  সত্যিকার  অর্থে সরকারকে সঠিক উদ্যোগ ও কার্যকরী আইনগত ব্যবস্থা  নিয়ে  অগ্রসর  হতে  হবে।  

লেখক: সাবেক সহসভাপতি, এফবিসিসিআই

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা/পাভেল



এই পাতার আরো খবর