ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বিশেষ ফ্লাইটের বাড়তি ভাড়া 'মরার উপর খাড়ার ঘা'
কামরুল হাসান জনি
বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটের ভেতরের চিত্র।

মহামারি করোনাভাইরাসের থাবায় বিশ্বব্যাপী জনজীবন প্রায় স্থবির। এই সময়ে দেশে আটকে থাকা প্রবাসীরা ফিরতে চান কর্মস্থলে। যারা প্রবাসে রয়েছেন তারা চান স্বজনের কাছে যেতে। কিন্তু এই প্রতীক্ষা যেন শেষ হবার নয়। অপেক্ষার ঘড়িতে সময় গুণছেন সবাই। মাঝখানে কর্মহীন, চাকরিচ্যুত প্রবাসী কিংবা পরিবার নিয়ে থাকা প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তান বা বৃদ্ধ বাবা-মা অথবা অসুস্থ প্রবাসীরা জরুরিভিত্তিতে ফিরে যাচ্ছেন দেশে। করোনার পরিস্থিতিতে তারা একপ্রকার অসহায়। 

আমিরাত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সমন্বয়ে কিছু সংখ্যক প্রবাসী দেশে ফেরার এই বিশেষ সুযোগ পাচ্ছেন, ফিরছেনও। কিন্তু এই অসহায় মূহুর্তে বিশেষ ফ্লাইটের বাড়তি ভাড়া তাদের ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে উঠেছে। 

সোমবার আবুধাবি থেকে ঢাকায় ছেড়ে যাওয়া ইতিহাদ এয়ারওয়েজের সিঙ্গেল টিকেটের মূল্য ছিল ২ হাজার ২০০ দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০ হাজার ৬০০ টাকা। এর আগে শনিবার বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে সিঙ্গেল টিকেটের ভাড়া ছিল ১ হাজার ৮৭০ দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৩ হাজার ১০ টাকা। 

যেখানে একপ্রকার অসহায়ত্বে দিন পার করছেন প্রবাসীরা সেখানে বিশেষ এই ফ্লাইটের বিশেষ মূল্য বাড়তি বোঝা কিংবা বলা যায় প্রবাসীদের উপর অদৃশ্য এক চেপে দেয়া যন্ত্রণা। 

প্রায় প্রতিটি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ যাত্রী নিয়ে। প্রবাসীদের মধ্যে একটি ধারণা কাজ করছে, হয়ত একটি সিট বাদ দিয়ে একটি সিটে যাত্রী নিচ্ছে এসব ফ্লাইট। তাদের ধারণার বিপরীতে বর্তমানে বিশেষভাবে পরিচালিত হওয়া ফ্লাইটগুলো স্বাভাবিক ফ্লাইটের মতই যাত্রী পরিষেবা সচল রেখেছে। অর্থাৎ প্রায় সবক’টি সিটের সম্পূর্ণ যাত্রী নিয়েই এগুলো চলাচল করছে। তবুও বাড়তি ভাড়া ধরার কারণ হিসেবে ওয়ানওয়ে যাত্রী সেবার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। 

যদিও পরিস্থিতি এমনই। তবুও সহনীয় পর্যায় থেকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করছি। দেশের নাগরিকদের জন্য সরকার চাইলে কিছুটা চিন্তা করতে পারেন, দিতে পারেন সামান্য ভর্তুকিও। বিশেষত এরা যে লাল-সবুজের দেশেরই নাগরিক। প্রবাসীদের অসহায় চেহারাগুলো দিকে তাকিয়ে হলেও বিবেচনায় নিন বিষয়টি। অন্তত স্বাভাবিক ফ্লাইট চালুর পূর্ব পর্যন্ত পরিচালিত হওয়া এসব বিশেষ ফ্লাইটে ভাড়া কিছুটা সহনীয় করে দিতে আকুল আবেদন রইল। প্রবাসীদের মায়ার জালে জড়িয়ে নিন। আমার বিশ্বাস, তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দ্রুতই তা পুষিয়ে দিবে।  

লেখক : সংবাদকর্মী, সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম



এই পাতার আরো খবর