ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রোগের চেয়ে চিকিৎসা ব্যয় এখন বড় আতঙ্ক
হাসিনা আকতার নিগার

প্রতিটি মুহূর্তে বাঁচার লড়াইয়ে এখন মৃত্যু ভয় তাড়া করছে অনেক বেশি। ঘর থেকে বের হলেই মনে হয়, করোনা নামের ভাইরাসটি কি আমার সাথী হলো? আর তখনই চিন্তায় আসে এ রোগের কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেবার মত অর্থ না থাকা মানে মৃত্যু। যদিও বিশ্বাস করি, জন্ম ও মৃত্যু মানুষের  হাতে নেই। তবে রোগ হলে চিকিৎসা করে বাঁচতে চায় সবাই।  

জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি  হলো চিকিৎসা। আর এ চাহিদাটা নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ।  কোভিড-১৯  চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, মানুষ কতটা  অসহায় পরিস্থিতির শিকার হয়  চিকিৎসার অব্যবস্থাপনা কারণে। করোনাভাইরাস আতঙ্ক এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বরং এর দ্বিতীয় ওয়েবে বাড়ছে আক্রান্তের হার। আমাদের দেশে টেস্ট কম বলে সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা অনেকটা কষ্টসাধ্য। আর এর প্রতিরোধে মানুষের সচেতনতা নেই বললে চলে। কিন্তু এ ভাইরাসের কারণে মানুষের গতানুগতিক রোগের চিকিৎসা করানো এখন একদিকে হয়রানি অন্যদিকে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে দিন দিন। সাধারণ মানুষের  কাছে রোগের চেয়ে চিকিৎসা ব্যয়ই এখন বড় আতঙ্ক। 

ভালো চিকিৎসার আশায় মানুষ ছুটে যায় বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে কোভিড -১৯ এর কারণে চিকিৎসা খরচ আগের তুলনায় বেশি। ঢাকার নামকরা এক হাসপাতাল তাদের করোনাভাইরাস প্রোটেকশনের বাড়তি খরচ আদায় করছে রোগীদের থেকে অতিরিক্ত ফির মাধ্যমে। এমনকি একই রোগী ডাক্তার ভিজিট, রিপোর্ট দেখানো বা অন্য চিকিৎসার জন্য যতবার যাচ্ছে ১/২ দিনের ব্যবধানে ততবারই গুনতে হয় এ বাড়তি টাকা। 

মানুষ উপায়হীন তাই বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছে সব। কারণ জীবন বাঁচানোর দায়ে নিজের সাধ্যের বাইরেও ছুটে যায় বেসরকারি  হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালের ভোগান্তি আর দুর্নীতি কেবল খবর হয়ে আছে জনগণের সামনে। সেখানে সাধারণ চিকিৎসা আশাব্যাঞ্জক নয়। সমস্যার সমাধান নাই কিন্তু স্বাস্থ্যসেবার নামে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হচ্ছে।

২০২০ সালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আবারও মানুষ করোনার চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত। রোগ বাড়ছে, নেই সচেতনতা। আসলে এ রোগের ভুক্তভোগী ও তার পরিবার ছাড়া আর কেউ বুঝবে না এর ভয়াবহতা। মৃত্যু শঙ্কার সাথে চিকিৎসা খরচ কীভাবে সব শেষ করে তা দেখা যায় হাসপাতালের বারান্দায়। 

বছরের শুরুতে মানুষের একটাই চাওয়া ছিল স্বাস্থ্যসেবার পরিবর্তন। সে পরিবর্তনের নামে এখন সাধারণ রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহন করা হয়ে যাচ্ছে কষ্টসাধ্য। করোনার সাথে বসবাস- এমন বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে চলছে প্রাত্যহিক জীবন। আর সে সাথে করোনার ভয় কাটিয়ে চিকিৎসক ও হাসপাতাল দয়া করে মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছে, এটাই বিধাতার বিশেষ রহমত মনে করে সান্ত্বনা খুঁজে জনগণ।

লেখক: কলামিস্ট 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর