ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা রুজু করার ষড়যন্ত্র
ড. মোঃ আওলাদ হোসেন
ড. মোঃ আওলাদ হোসেন

৩১ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭, জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অজুহাতে একাধিক মামলা রুজু করার ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রের ছক অনুযায়ী তাদের সাজানো উত্তর না দেওয়ায় আমার উপর অমানুষিক শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। সেই নির্যাতনের আরও অনেক বর্ণনা রয়েছে যা পরে দেয়া যাবে। সেদিকে না গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রশ্ন ও সাজানো উত্তরের ধরনসমূহে ফিরে আসি।

মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তন্মধ্যে একটি ছিল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষে ঢাকায় আমজনতার গণপিটুনিতে সন্ত্রাসী নিহতের ঘটনায় মাননীয় নেত্রীকে হুকুমদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা। 

উনারা প্রশ্ন করলেন, ‘২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সংঘটিত সংঘর্ষে কয়েকজন লোক নিহত হয়েছিল। ঐ হত্যাকাণ্ড কিভাবে হলো?‘ 

উত্তরে আমি বললাম, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী ‘লগি-বৈঠা’ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গণজমায়েত বাস্তবায়নে নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই জমায়েত হতে থাকে। আমি টেলিফোনে সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখছিলাম। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোক সমাগমও বাড়তে থাকে। লোক সমাগম বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ছাড়িয়ে পল্টন ময়দান পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আহুত শান্তিপূর্ণ জমায়েত ভন্ডুল করার জন্য বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা নানারকম মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে অবস্থান নিয়েছিল। 

ফলে দুই গ্রুপ মুখোমুখি হয়ে যায়। যোহর নামাজের একটু আগে, ১২টা/সাড়ে বারোটা নাগাদ একটি এ্যাম্বুলেন্স রোগী ও বেশ কয়েকজন লোকসহ ঢাকা মেডিকেলে যাবে বলে দৈনিক বাংলার মোড়ে অবস্থানরত মানুষের ভিড় ঠেলে পল্টন মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। সেখানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সহায়তায় মানবিক কারণে সমাগত নেতাকর্মীরা এ্যাম্বুলেন্সটিকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। তখন কেউই বুঝতে পারেনি, এ্যাম্বুলেন্সের রোগী ও লোকগুলো নানা অস্ত্রে সজ্জিত বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসী। ওরা এসেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খুন করার জন্য।

হঠাৎ সংবাদ পেলাম পূর্বের ঐ এ্যাম্বুলেন্সের কিছু লোক হাউসবিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনের দোতলায় এবং অপর কিছু লোক বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইটের উল্টো দিকে একটি বিল্ডিং এর দোতলায় অবস্থান নিয়েছে। অল্প কিছুক্ষণ পর হাউজবিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনের দোতলায় অবস্থানরত লোকগুলো পল্টন মোড়ে অবস্থানরত আমাদের নেতাকর্মীদের উপর এবং ভিন্ন গ্রুপটি দৈনিক বাংলা মোড়ে অবস্থানরত সাধারণ মানুষের উপর গুলিবর্ষণ করলো। ওদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মহিলা নেতাকর্মীরা আগে থেকেই পল্টন মোড় নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল।

সর্বত্রই এক ভীতিকর ও থমথমে অবস্থা বিরাজমান। এক পর্যায়ে দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া শুরু হলো। সাধারণ মানুষের গণপিটুনিতে বিএনপি-জামায়াতের কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রাণ হারালো।’

JIC-র প্রশ্নকারিরা বার বার আমার উপর চাপ প্রয়োগ করছিল যে, ‘আপনি বলুন, ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে নানক-আজম-বাহাউদ্দিন নাছিম এর নেতৃত্বে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে’। আমি ওদের প্রস্তাবে রাজি হইনি, এ জন্য বারবার অমানুষিক শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছিল।

চলবে...

লেখক: ড. মোঃ আওলাদ হোসেন ভেটেরিনারীয়ান, পরিবেশবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক কর্মী।

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর