ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

৩০ এপ্রিলের ট্রাম্প কার্ড প্রসঙ্গ
ড. মোঃ আওলাদ হোসেন
ড. মোঃ আওলাদ হোসেন

পূর্বের লেখায় আমি লিখেছি, জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্ন ও তাদের সাজানো উত্তরের ধরন দেখে খুব সহজেই বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য একটাই, মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা সাজানো। আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করে আমাকে দিয়ে ওদের সাজানো কথা বলাইয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে সততার প্রতীক, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারবদ্ধ রাষ্ট্রনায়ক, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ সাজানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে ওনারা।

আমাকে প্রশ্ন করা হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যে একজন সৎ লোকের নাম বলুন। উত্তরে আমি বললাম, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা`। পুনরায় বললেন, ‘বুঝলাম, তিনি জাতির জনকের কন্যা, তিনি তো সৎ হবেনই। আরেকজনের নাম বলুন`।  আমি একজন মফস্বল নেতার নাম বললাম। প্রত্তুতরে তিনি আমাকে ভর্ৎসনা করে একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের নাম বলে আমাকে প্রশ্ন করলেন, ‘এই নামটা মুখে আসে না`? আমি বললাম ‘সততা নামক এই গুণটি মানুষের চরিত্রে আপেক্ষিক। আপনার দৃষ্টিতে ঐ ব্যক্তি ‘সৎ` হতে পারে, কিন্তু আমার দৃষ্টিতে সৎ নাও হতে পারে`। কারণ একজন মানুষের সকল গুণাগুণ জানা সম্ভব নয়। সকল গুণাবলী বিবেচনা না করে একজন মানুষ সম্পর্কে ‘সৎ/অসৎ` হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না।

রাজনৈতিক সচেতন প্রায় সকলেই জানেন, ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল সাহেব ঘোষণা করেছিলেন যে, ৩০ এপ্রিল তারিখের মধ্যে সরকারের পতন ঘটানো হবে। তাঁর হাতে ট্রাম্প কার্ড রয়েছে। এই ট্রাম্প কার্ড কী তা কখনো প্রকাশ করা হয়নি। এটি এখনো রহস্যাবৃত। তবে ৩০শে এপ্রিলে সরকারের পতন ঘটেনি। এই ট্রাম্প কার্ড তত্ত্বের জন্য আব্দুল জলিল সাহেব দলের অভ্যন্তরে ও বাইরে সমালোচিত হয়েছিলেন। 

জিজ্ঞাসাবাদে সেই বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হলো, ‘ট্রাম্প কার্ড’ বলতে জলিল সাহেব কি বুঝিয়েছিলেন’? আমি বললাম, ‘আমি যতটুকু শুনেছি ঐদিন একজন NGO ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বে সারাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ লোক রাজধানীতে সমবেত হবে’। কিন্তু উনারা বললেন, ‘একথা বললে হবে না। ঢাকায় লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হবে, অথচ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মায়া সাহেব এই কর্মসূচি সম্পর্কে ‌অবগত ছিলেন না। ঐদিন মায়া সাহেবের তেমন কোনো কর্মকাণ্ডও চোখে পরেনি। সুতরাং এধরনের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আপনাকে বলতে হবে, ‘ঐদিন ভারতীয় সৈন্য দ্বারা বাংলাদেশ দখলের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল’। আমি ওনাদের কথামতো উত্তর না দেওয়ায় একজন বললেন, ‘সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবেনা, ঝুলাইয়া দেন’।

যেই কথা সেই কাজ। আবারও একইভাবে ছাদের ফ্যান হুকের সাথে আমাকে ঝুলানো হলো। শুরু হলো চারিদিক থেকে এলোপাতাড়ি নির্মমভাবে পেটানো। এ যেন কোনো মানুষ নয়, অন্য কিছুকে পেটাচ্ছে। দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার ব্রত নিয়ে সারাজীবন সততার সাথে রাজনীতি করেছি। এমন নির্যাতনের শিকার হবো কখনও ভাবিনি। কিন্তু শত অত্যাচারেও জননেত্রী শেখ হাসিনার বা দলের অন্য কারো নামে কোন মিথ্যা কথা বলিনি।

আজ খুব কষ্ট হয়, কী দেখছি? চারিদিকে হাইব্রিড আর আদর্শহীন সুবিধাবাদীদের জয়জয়কার। প্রচার মাধ্যমে দেখি দলে দলে অনুপ্রবেশকারীরা দলের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ টাকার পাহাড় বানিয়েছে। বিএনপি-জামাত বাছ-বিচার নেই, বিশেষ ব্যবস্থায় ওরাই আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন পর্যায়ের পদ-পদবী বাগিয়ে নিচ্ছে।

চলবে...

লেখক: ড. মোঃ আওলাদ হোসেন ভেটেরিনারীয়ান, পরিবেশবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক কর্মী।

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ



এই পাতার আরো খবর