ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশের দিন ২৬ মার্চ
অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ
অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে নিজেকে স্বাধীন, সার্বভৌম জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণার দিন। মহিমান্বিত সেই দিনটিকে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি স্বাধীনতা সংগ্রামের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ হাজার শহীদকে এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। আজকের দিনে আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

এ বছর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। যে স্বপ্ন ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তা এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের তুলনায় দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ার পরও মৌলিক খাদ্যচাহিদা পূরণ হয়েছে, শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, বিশেষত প্রাথমিক শিক্ষায়। স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, মানবসম্পদ উন্নয়নের অনেক সূচকে আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানীমূখী শিল্পায়ন, ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রপ্তানী আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহ। 

বাংলাদেশের অর্জনক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে তার ভূমিকা, জনবহুল দেশে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুতা আনয়ন, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৫০ বছরের অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার ও জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম। 

শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেবার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো- শতভাগ ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ কার্যক্রম। নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নেবার জন্য প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চালু করা হয়েছে উপবৃত্তি ব্যবস্থা।  

নারীর ক্ষমতায়নে অর্জন; নারী বঞ্চনার তিক্ত অতীত পেরিয়ে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেকদূর এগিয়েছে। পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ। আর এই শিল্পের সিংহভাগ কর্মী হচ্ছে নারী। ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশে গ্রামীণ উন্নয়নে ও নারীর ক্ষমতায়নে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে।

জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ; ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যোগদানের পর শান্তি মিশনে খ্যাতি ও সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।   

করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফল: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। সারা বিশ্বে সরকারপ্রধানরা যখন করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা করোনা পরিস্থিতি সুন্দরভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছি।   

লেখক:  অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট, সাউথ এশিয়ান ল’ইয়ার্স ফোরাম।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর