ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে
ফারজানা আখতার সুপর্না

জাফর ইকবাল স্যার বলেছিলেন, পৃথিবীর একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি করার সুযোগ রয়েছে। 

পঁচাত্তরের পনের আগস্টের পর প্রেক্ষাপট বদলে গিয়েছিলো এদেশের। জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে এদেশে স্বাধীনতা বিরোধীরা মন্ত্রী হয়েছে, যুদ্ধাপরাধে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত খুনী আসামিকে নিয়ে পত্রিকার ফ্রন্ট পেইজে নিউজ হয়েছে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার বন্ধ রাখা হয়েছিলো দীর্ঘদিন, খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরষ্কৃত করা হয়েছিলো! শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত হাতে জাতীয় পতাকা উঠেছে বেগম জিয়ার শাসনামলে, গাড়িতে জাতীয় সংসদের স্টিকার লেগেছিলো, জামায়াত পুনর্বাসিত হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, যারা পরবর্তীতে বিদ্বেষমূলক আচরণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারকে বারংবার আঘাত করেছে! টকশোতে খোলামেলা সমালোচনা কারী কিন্তু নিজেই বিতর্কিত সেও পার পেয়েছে! অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচারের সাহসও করেছে কতো শত বার সে হিসেব নাই!   ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে লালন করতে হবে, ধারণ করতে হবে। সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।

অন্তঃসারশূন্য জাতি নই আমরা, আমরা বীরের জাতি। পেছনে থেকে কে মিথ্যা হুংকার দিলো, কে দেশের বাইরে বসে ষড়যন্ত্র করলো সেসব ভাবার সময় নেই। মিথ্যাচার কখনো জনগণের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবে না।

করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা, বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করে দেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় দ্রুততার সাথে অগ্রসর হচ্ছে। মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে এ ডিসেম্বর মাসেই।   পদ্মাসেতু নিয়ে গুজব ছড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার হীনচেষ্টাকারী রুমিন ফারহানাসহ বিএনপির এমপিরা মহান জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে বহু আগেই। জনসম্পৃক্ততাহীন জনপ্রতিনিধি দেশের বোঝা স্বরুপ! সুযোগ সুবিধা হাতিয়ে বিএনপির এমপিদের পদত্যাগ জাতির সাথে একধরনের প্রহসনের সামিল। সারাদিন বিভিন্ন মিডিয়ায় তাদের এ স্বার্থপ্রিয়তা কেবল হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। 

বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ যেমন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেননি একাত্তরে, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যাও দিবেন না। দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের নকশা ভিডিও বার্তায় হুমকি ধমকেরও রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসুন।   আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন, "২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।"   প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২২ এর বক্তব্যে স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—১. স্মার্ট সিটিজেন; অর্থাৎ প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন। ২. স্মার্ট ইকোনমি; অর্থাৎ অর্থনীতির সব কাজই প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা হবে। ৩. স্মার্ট গভর্নমেন্ট; এটা ইতোমধ্যে অনেকটা করা হয়েছে, বাকিটাও করে ফেলা হবে এবং ৪. স্মার্ট সোসাইটি; অর্থাৎ আমাদের পুরো সমাজটাই হবে স্মার্ট।’

আমরা এগিয়ে চলেছি সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে। দেশি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে, পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে কর্মক্ষেত্রের, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে, নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হচ্ছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে।  

উন্নয়নবান্ধব রাজনীতি করুন, ধ্বংসাত্মক মনোভাব পরিহার করুন। জনগণের পাশে থেকেছে আওয়ামী লীগ। জনগণের কল্যাণেই নিবেদিত আওয়ামী লীগ।  

জনগণের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেই এগিয়ে চলেছে দুর্বার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রজন্মকে কোন অপশক্তি বিভ্রান্ত করতে পারবে না জেনে রাখুন। চাঁদে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রজন্মের চোখে পড়ে না। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের যুগে কল্পকাহিনী নির্ভর কার্টুন চরিত্রে রূপান্তরিত করবেন না আর নিজেদের।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রাককালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান আত্মত্যাগী সকল শহীদের আত্মার প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তোমাদের এ ঋণ কোনদিন শোধ হবে না!

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। 

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হোম ইকোনমিকস কলেজ ছাত্রলীগ।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর