ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

এই নিকৃষ্ট দালালদের চিহ্নিত করা দরকার
ড. সেলিম মাহমুদ
ড. সেলিম মাহমুদ

সম্প্রতি কয়েকজন দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাবাদী ব্যক্তি বিদেশি শক্তির দালাল হিসেবে দেশের বিরুদ্ধে নগ্নভাবে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সমগ্র জাতি স্তম্ভিত হয়েছে তাদের জঘন্য ও ঘৃণ্যতম দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড দেখে। তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে তার পাহাড়সম দুর্নীতির অসংখ্য ঘটনা দেশের সকল শিক্ষককে অপমানিত করেছে। তাকে শিক্ষক নামের কলঙ্ক বললেও কম বলা হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে এরকম অসংখ্য, অভিনব ও জঘন্য দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায়নি।

এক-এগারোর সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আন্দোলনরত ছাত্র শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এই দালাল। এজন্য তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেশবিরোধী দালাল আখ্যা দিয়ে ধাওয়া করেছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ৪৩টি দুর্নীতির অভিযোগ সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির  কাছে প্রমাণিত হয়েছে। 

সম্প্রতি তার দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রায় তিনি রাষ্ট্রবিরোধী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭খ (২) অনুযায়ী পরিষ্কারভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ। এই ব্যক্তি সরাসরি ঘোষণা দিয়ে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। তার ঔদ্ধত্যের কারণে দেশপ্রেমিক মানুষ স্তম্ভিত হয়েছে। বিস্ময়কর ঘটনা হচ্ছে, যে সকল গণমাধ্যম সম্প্রতি তার দেশবিরোধী ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করছে, সে সকল গণমাধ্যমেই তার ব্যাপক দুর্নীতির সংবাদ ইতোপূর্বে প্রচারিত হয়েছিল।

এই ব্যক্তি শুধু দুর্নীতিবাজই নন, একজন চিহ্নিত ভণ্ড ও প্রতারক। সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ২০১৪ ও ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা মিথ্যাচার করছেন। অথচ এই দুটি নির্বাচন নিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যবেক্ষক ইতিবাচক মতামত দিয়েছিল। তাদের মধ্যে তার নিজের প্রতিষ্ঠানও ছিল। আজ তিনি তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন। তবে তার সাম্প্রতিক বিতর্কিত নানা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে নিরপেক্ষতা হারানোর কারণে আরপিও এর অনুচ্ছেদ ৯১ সি এর বিধান অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে তিনি থাকলে ওই প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিগতভাবে তিনি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করতে পারবেন না।

রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষার স্বার্থে এসকল নিকৃষ্ট ও চিহ্নিত দেশবিরোধী দালালের বিরুদ্ধে এখনই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিত। যারা সামান্য স্বার্থের কারণে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিতে পারে এবং দেশের ভেতরে বসে দেশবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিদেশি শক্তির পক্ষে প্রকাশ্যে দালালি করে, তাদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না।

লেখক : আইনজ্ঞ এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

 



এই পাতার আরো খবর