বাংলাদেশের সংস্কৃতি, উন্নয়ন এবং অগ্রগতির নিয়ে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ‘মিট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান করেছেন বাংলাদেশ দূতাবাস। বাঙ্গালি ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক আবহে আঙ্কারার আতাকোস হোটেলে গত বুধবার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসবেরও আয়োজন করা হয়। তুরস্কে দায়িত্বে নিয়োজিত বিদেশী কূটনৈতিকবৃন্দ ও তুরস্কের জনগণের কাছে বাংলাদেশের সামগ্রীক উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং বৈচিত্রময় বাঙ্গালি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরতেই এ আয়োজন বলে জানিয়েছেন দূতাবাস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ-তুরস্ক পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল অকচ’র পার্লামেন্টারিয়ান ফাতমা সালমান। তুরস্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সামরিক বিভাগের কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সদস্যগণ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা। বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, ইস্তাবুলের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলামসহ উক্ত কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তারা সপরিবারে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দূতাবাস জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী, বাণিজ্য, বিনিয়োগ সুবিধা এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ণের অগ্রযাত্রার উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। পরে বাঙ্গালী সংস্কৃতির গৌরবময় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে দেশী-বিদেশী (বাংলাদেশী ৩২ জন ও তুর্কী ১৪ জন) শিল্পীদের সমন্বেয়ে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠারে প্রথমেই বাংলাদেশের বিখ্যাত মসলিন, জামদানি, কাতান শাড়ির উপর একটি ফ্যাশন শো’র আয়োজন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি হতে আগত শিশু-শিল্পীদের নিয়ে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক বিভিন্ন নৃত্য পরিবেশণার আয়োজন করা হয়, যা অনুষ্ঠানে আগত অতিথিসহ উপস্থিত সকলের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। এছাড়া বাঙ্গালি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে, আমন্ত্রিত উৎসুক অতিথিদের হাতে মেহেদির লাল আলপনা আঁকিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠানস্থলের একাংশে একটি মেহেদি (হেনা) কর্ণার খোলা হয়। এছাড়াও, অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত মহিলা অতিথিদেরকে বাঙ্গালি শাড়ি, শাড়ি পরিধানের কৌশল এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শাড়ির প্রতি আকৃষ্ট করতে অনুষ্ঠানস্থলে একটি শাড়ি কর্ণারও খোলা হয়। এ শাড়ি কর্ণারে বিদেশী মহিলা অতিথিদের ব্যাপক উপস্থিতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।
রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকী তার সংক্ষিপ্ত সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আগত সকল বিদেশী অতিথি, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপণ করেন। দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত এ পিঠা উৎসবে প্রায় আঠারো প্রকারের বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্রকারের বাঙ্গালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার