ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নিউইয়র্কে বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত করার অঙ্গীকার
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে
বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে স্থায়ী মিশন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্কের যৌথ আয়োজনে ৪৮তম বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। 

১৬ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। সকালে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের শুভ সূচনা হয়। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

বিজয় দিবসের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকরা অংশ নেন। এটি এক পর্যায়ে প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে উঠে আসে জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, বাঙালির বিজয় অর্জনের ইতিহাস, মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন স্মৃতি, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন এবং রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক। 

এসময় আলোচকগণ জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী সামনে রেখে বাংলাদেশকে তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার লক্ষ্যে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে অবদান রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং এরপর শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে দেয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সর্বস্তরের প্রবাসী বাঙালিদের সমাগমে মুখরিত এ আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। 

রাষ্ট্রদূত তার স্বাগত বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। 

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল, একটি দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত। জাতিসংঘেও আমাদের অবস্থান অত্যন্ত সম্মানের। তিনি এলডিসি থেকে উত্তরণ, রোহিঙ্গা ইস্যু, এসডিজি বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, বিশ্ব শান্তি রক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের কর্মকাণ্ড বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে মর্মে উল্লেখ করেন রাবাব ফাতিমা। তিনি রেমিট্যান্স প্রেরণ ছাড়াও প্রবাসীদের দক্ষতা, নলেজ রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগের মাধ্যমে সরাসরি দেশের উন্নয়নে আরও ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার আহ্বান জানা এ স্থায়ী প্রতিনিধি।

রাষ্ট্রদূত রাবাব জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে বিজয়ের এ দিনে দেশের উন্নয়নে প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আপনারাই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের প্রকৃত প্রতিনিধি। আপনাদের প্রেরিত রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে বিশেষ অবদান রাখছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা শিশুদের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান।

বিজয় দিবসের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাগণকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আব্দুল মুকিত চৌধুরী, রাশেদ আহমেদ, ডা. বাতেন। শহীদ পরিবারের সন্তানদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. মাসুদুল হাসান ও ফাহিম রেজা নুর। 

এছাড়া প্রবাসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইরিন পারভীন, শাহনাজ মমতাজ ও মুজাহিদুল ইসলাম। প্রবাসীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাইমা খান ও শেলী এ মুবদি। 

আলোচনা পর্ব শেষে স্থানীয় সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বাপার শিল্পীরা দেশাত্ববোধক ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করে। সঙ্গীত ও কবিতার সাথে নৃত্যের পরিবেশনা অনুষ্ঠানটিতে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোর শিল্পীদের উপহার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দুটি প্রদান করা হয়। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন



এই পাতার আরো খবর