ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘের এলডিসি কনফারেন্সের রূপান্তরধর্মী কর্মসূচির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও কানাডা
অনলাইন ডেস্ক
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৪ মে ‘পঞ্চম এলডিসি সম্মেলন’র সপ্তাহব্যাপী প্রস্তুতি সভা শুরু হয়েছে। যৌথভাবে এ সভা আহ্বান করেছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এবং কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত বব রে।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ও কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধিদ্বয়কে যৌথ সভাপতি নির্বাচিত করা হয় কাতারে রাজধানী দোহায় আসছে জানুয়ারিতে ওই সম্মেলনের বিস্তারিত প্রস্তুতির জন্যে। ধারণা করা হচ্ছে ‘পঞ্চম এলডিসি কনফারেন্স’টি হবে জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ সম্মেলন। এই সম্মেলনে এলডিসি’র পরবর্তী কর্মসূচির জন্য একটি নতুন বৈশ্বিক কম্প্যাক্ট গৃহীত হবে-যা দেশগুলির আশু ও দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত উভয় ধরনের সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনটির কো-চেয়ার হিসেবে টেকসই উন্নয়ন এবং উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা পদক্ষেপসহ বেশকিছু অগ্রাধিকারমূলক বিষয় এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

আরও উল্লেখ্য, জাতিসংঘ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত স্বীকৃতি দিয়েছে।

স্বল্পোন্নত দেশসমূহের বৈশ্বিক সভাপতি হিসেবে মালাওয়ি’র রাষ্ট্রপতি ম্যাককার্থি চাকওয়েরা সোমবার এ ইভেন্টে ভার্চুয়ালে যোগদান করেন এবং কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেন। এছাড়া কি-নোট স্পিকার হিসেবে আরও বক্তব্য দেন সম্মেলনটির স্বাগতিক দেশ কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ্ আল-মুরাইখি।

উদ্বোধনী পর্বে আরও কথা বলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বজ্কির, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে. মোহাম্মদ, ওইসিডি’র উন্নয়ন সহায়তা কমিটির সভাপতি সুজানা মুরিহেড এবং জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, ভূবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফেকিতামইলোয়া কাটোয়া উতয়কামানু।

প্রথম সেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বে জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধিবর্গ বক্তব্য দেন। কোভিড-১৯ অতিমারির প্রভাবে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ যেসব মারাত্মক পরিণতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা উঠে আসে সাধারণ বিতর্ক পর্বের আলোচনায়। এলডিসি’র দেশসমূহের জন্য উচ্চভিলাষী আগামী ১০ বছরের কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ও অংশীদারিত্ব প্রদর্শন করেন কূটনীতিকরা।

কোভিড-১৯ এর বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ এর উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, এখন স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য সর্বোচ্চ প্রাধিকার হচ্ছে কোভিড-১৯ এর টিকার সহজ ও বাধাহীন প্রাপ্তি।  তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যদি টিকার বিষয়টি এখনই সমাধান করা না হয় তবে সামনের বছরগুলোতে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ তীব্র মানবিক ও অর্থনৈতিক দূরবস্থার মধ্যে নিপতিত হবে”।

এলডিসি থেকে উত্তরিত ও উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনা-ভিত্তিক উত্তরণ প্যাকেজের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এটি করা না হলে কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং এলডিসি সংশ্লিষ্ট সহায়তা পদক্ষেপের অভাবে দেশগুলির নিচের ধাপে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। অন্য বিষয়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ  দারিদ্র্য ও অসমতা, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক ঋণ, অভিবাসন ও রেমিট্যান্স বিষয়ক যে সকল বহুমূখী চ্যলেঞ্জ ও নাজুক পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

কাতারের দোহায় এলডিসি-৫ সম্মেলনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে প্রস্তুতিমূলক কমিটির এই সপ্তাহব্যাপী সভা  প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সভার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সেশনসমূহে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর