অনুষ্ঠানের সুচনা হয় ঘাতক চৌধুরী মাইনুদ্দিনের হত্যার শিকার ১৮ জন শ্রেষ্ঠ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ১৮টি প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে। এরপর একাত্তরের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন ও শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
আলোর মিছিলে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসর আলবদর-রাজাকার-জামাত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত করে। হত্যা করে ত্রিশ লাখ বাঙ্গালী নারী পুরুষ, ইজ্জত হরণ করে দুইলাখ বাঙ্গালী নারীর। একাত্তরের ২৫ তারিখে ঢাকায় প্রথম প্রহরেই হত্যা করে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হলেও সে সময়ের স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষিতে পশ্চিমা বিশ্ব ও চীন গণহত্যাকারি পাকিস্তানিদের কেবল সহযোগীতাই করেনি, গণহত্যার রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভে বিভিন্নভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। ১৯৭৫ সালের প্রতিবিপ্লব ও জাতির জনককে হত্যা এবং পরবর্তী দুইদশক পাকিস্তানপন্থি শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিলম্বিত হয়।
স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বাংলাদেশ সরকারকে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার জন্য জোর দাবি জানান।
সভায় বক্তারা শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ঘাতক চৌধুরী মাইনুদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের রায় কার্যকরের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ইউরোপিয়ান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনসার আহমেদ উল্লাহ, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সম্মানিত মেয়র কাউন্সিলার আহবাব হোসেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মতিয়ার চৌধুরী , ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার উপদেষ্টা ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা মুরাদ কুরেশি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জননেতা মারুফ চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মাহমুদুর রহমান শাহনুর এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার কার্যকরী পরিষদের সদস্য সুশান্ত দাস। এ ছাড়াও আলোর মিছিলে উপস্থিত ছিলেন নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সহসভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জামাল খান, কার্যকরী কমিটির সদস্য স্বনামধন্য নাট্যশিল্পী মাহফূজা তালুকদার, কার্যকরী কমিটির সদস্য প্রথিতযশা সিনিয়র সাংবাদিক রুমানা রাখি প্রমুখ ।
বিডি প্রতিদিন/এএ