ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে দিনব্যাপী শিশু-কিশোর আনন্দমেলা
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে ১৭ মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উদযাপন করা হয়। 

জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতীয় শিশুদিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় ও জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হয়।

এছাড়াও দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে এক উৎসবমুখর পরিবেশে প্রবাসের নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে দিনব্যাপী শিশু-কিশোর আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়। শিশু-কিশোর আনন্দমেলায় অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরেরা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ দৃশ্য ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ” বিষয়ে শিশু-কিশোরদের জন্য বয়সভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ/উপস্থাপন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। 

এসকল প্রতিযোগিতায় অর্ধ শতাধিকেরও বেশী শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বক্তব্য প্রদান করেন এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপনে বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন। 

রাষ্ট্রদূত মুহিত তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম এবং নিপীড়িত-বঞ্চিত শোষিত মানুষের অধিকার আদায় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও নেতৃত্বের বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। তিনি এ বছরের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনবো হাসি সবার ঘরে’-এর উপর আলোকপাত করে বলেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অপরিসীম স্নেহ ও ভালোবাসা এবং বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন শিশুদের সঠিক বিকাশ নিশ্চিতকরণ সোনার বাংলা গড়ে তোলার অন্যতম চাবিকাঠি। বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে পরবর্তীতে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শিশুদের উন্নয়ন ও সমান অধিকার রক্ষায় যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং বর্তমান প্রজন্মকে স্মার্ট, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলছেন। এসময় তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগ ও সাফল্য তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা একটি চলমান দর্শন এবং এই সোনার বাংলা দর্শনের ধারাবাহিকতার একটি অংশ হলো আজকের স্মার্ট বাংলাদেশ উদ্যোগ। রাষ্ট্রদূত মুহিত আরও বলেন, জাতিসংঘে শিশুসনদ গৃহীত হওয়ার প্রায় ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে জাতীয় শিশু আইন প্রণয়ন করেন এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করেন। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম স্নেহ ও ভালোবাসাকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৯৭ সাল হতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হচ্ছে। এছাড়াও তিনি ফিলিস্তিনে হাজার হাজার শিশুর উপর ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিপীড়িত ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাবে বলে উল্লেখ করেন। 

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন। 

দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বসবাসরত শিশু-কিশোরগণ ও তাদের অভিভাবকগণ, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবর্গ, বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বগণ এবং স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণের সন্তান ও পরিবারের সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীগণ ব্যপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন এবং সার্বিক আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর