ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রাণের উচ্ছ্বাসে এবিপিসির পিকনিক
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

 

দাবদাহকে সবুজের শ্যামলিমা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর জর্জ আইল্যান্ড পার্ক দূরে সরিয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হলো মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালনকারি ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ সঙ্গীতে। আর এটি পরিবেশিত হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিংবদন্তি শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়ের নেতৃত্বে ১১ বীর মুক্তিযোদ্ধার সমবেত কণ্ঠে। 

মুক্তিযুদ্ধের সেই রণ সঙ্গীতের মূর্চ্ছনায় অভিভূত হয়ে গণমাধ্যমকর্মী আর কম্যুনিটির বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরা এবিপিসির (আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব) বনভোজনের পুরো সময় অতিবাহিত করেন। 

২১ জুলাই বাংলাদেশের জন্য একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রমের সন্ধিক্ষণ ছিল। মাননীয় আদালত কোটা সংস্কারের দাবির আলোকে ঐতিহাসিক একটি দিক-নির্দেশনা প্রদান করে। এদিনই অধিকাংশ আমেরিকানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাও প্রদান করেন জো বাইডেন। এর ফলে ডেমক্র্যাট তথা মুক্ত-বিবেচনায় উজ্জীবিত আমেরিকানদেরও স্বস্তির শ্বাস ফেলতে দেখা যায়। 

এমনি একটি নির্মল আনন্দদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে পেশাগতভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে সম্পাদনের সংকল্পে বনভোজনের সকল কর্মসূচি পালিত হলো। বনভোজন কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির চেয়ারম্যান ও সিইও আলিম খান আকাশ এবং প্রধান সমন্বয়কারি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক আনিসুর রহমানের সার্বিক সমন্বয়ে এবিপিসির পুরো টিম নানা আয়োজনে সরব ছিলেন। 

ছোট্টমণিদের নানা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ক্লাব সদস্য এবং অতিথিগণের জন্যও ছিল বিনোদনমূলক প্রতিযোগিতা। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় উপস্থিত ১২ বীর মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, লাবলু আনসার, আবুল বাশার চুন্নু, রেজাউল বারি, রাশেদ আহমেদ, নাজিমউদ্দিন, আব্দুল হাই মঞ্জু, গোলজার হোসেন, এমদাদুল হক, আব্দুর রহমান, মেজবাউদ্দিন এবং মজিবর রহমানের সমবেত সঙ্গীতের আগে চলমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার সংকল্প ব্যক্ত করার মধ্যদিয়ে। সে সময় হাডসনের তীর বেয়ে ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টির জর্জ আইল্যান্ড পার্কের দুই নম্বর প্যাভিলিয়নটিও নেচে উঠেছিল। 

সকলের মাঝ খাবার সরবরাহ করেন নবান্নের অন্যতম মালিক শিমুল। সবাই তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। 

বনভোজনে বিনোদনমূলক খেলাধুলা পুরস্কার জিতেছেন নারী-পুরুষের সাথে ছোট্টমণিরাও। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রথিন্দ্রনাথ রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, বীর মুক্তিযোদ্ধা গুলজার হোসেন প্রমুখ। ৫ ডলারের র‍্যাফেল ড্র’র প্রথম পুরস্কার ছিল নগদ এক হাজার ডলার। এটি জিতে নেন আজিমউদ্দিন অভি। দ্বিতীয় পুরস্কার বিমান টিকিট (নগদ ৯০০ ডলার) জিতেছেন নুরুন্নাহার নিশা। হারুন ভূইয়ার দেয়া স্বর্ণের চেইন (তৃতীয় পুরস্কার) জিতে নিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক। 

র‍্যাফেল ড্র’র প্রথম পুরস্কার স্পন্সর করেন ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল হক, দ্বিতীয় পুরস্কার নিলুফা শিরিন, চতুর্থ পুরস্কার অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, পঞ্চম পুরস্কার বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভি, সিপিএ সারোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, ফাহাদ সোলায়মান, আশরাফ আলী খান লিটন, শ্যামল নাথ, লিটন আহমেদ প্রমুখ। পুরস্কার বিজয়ী তরুণ-তরুণী আর ছোট্টমণিরা হচ্ছে অঞ্জনা রহমান অর্থি, জয়, আয়ান, আলিশা খান প্রমুখ। 

পুরস্কার বিতরণ করেছেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। এরা ছিলেন সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সহ-সভাপতি ও বনভোজনের জন্য গঠিত উপ-কমিটির আহ্বায়ক আলিম খান আকাশ, প্রধান সমন্বয়কারি ও প্রচার সম্পাদক আনিসুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আজিমউদ্দিন অভি, সাবেক সভাপতি লাবলু আনসার এবং এবিপিসির সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ফারুক। 

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেবিবিএর সভাপতি হারুন ভূইয়া এবং সেক্রেটারি ও মূলধারার রাজনীতিক ফাহাদ সোলায়মান। 

আনন্দ-বিনোদনের এ আয়োজনে পরিপূর্ণতা দিতে সচেষ্ট ছিলেন কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়, নীলিমা শশী, রেশমি মির্জা এবং ড. কামরুল। পুরো আয়োজনের ছবি উঠিয়েছেন মোহাম্মদ হোসেন দীপু।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন 



এই পাতার আরো খবর