ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে ইসি ও সরকার ব্যর্থ: সিপিবি
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা সিটিতে জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি। দলের সভাপতি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম শনিবার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল জনগণের মধ্যে নানাভাবে ভয়-ভীতি সঞ্চার করায় অধিকাংশ মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেনি। তাই প্রকাশিতব্য ফলাফল জনগণ গ্রহণ করবে না। নগরীতে ভোটের নামে আরেকবার নতুন ধরনের প্রহসন সংগঠিত হতে দেখল ঢাকাবাসী। 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অধিকাংশ কেন্দ্রে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারি দলের দখলদারিত্ব জনমনে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে যাতে জনগণ কেন্দ্রে আসতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। ভোট কেন্দ্রের চারদিকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তিবর্গ ও সরকার দলীয় লোকজনের উপস্থিতিও মানুষকে ভোট বিমুখ করে তোলে। এজন্য মানুষ ভয়ে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের ভোটার নিশ্চিত না হলে তাদের তাড়িয়ে দেয় সরকার দলীয় সমর্থকরা। এমনকি ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ঢুকে ভোটারদের ভোটটিও সরকার দলীয় কর্মীরা দিতে না দিয়ে নিজেরাই ভোট দেওয়ার কাজটিও করেছে বলে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে সরকার দলীয় পোলিং এজেন্ট ছাড়া অন্যদের ঠাই হয়নি। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা উত্তরে অনেক কেন্দ্রে সিপিবির কাস্তে মার্কার সমর্থকদের ভোটদানে বাধা, হুমকি ও জোর করে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট,  গেটে ও ভোট কেন্দ্রে থাকা নেতাকর্মীরা।  সকাল ৮টায় উত্তরার দক্ষিণখানে সিপিবির কাস্তে মার্কার প্রার্থীর সমর্থক, কর্মী আলমগীরকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়। তেজগাঁও কাস্তে মার্কার ব্যাজধারীদের হুমকি দেওয়া হয়। সকাল ৯টায় পূর্ব রাজাবাজার রোটারী কেন্দ্রে কাস্তে মার্কার সমর্থককে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য জোর করে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট।  সকাল ১১টায় মনিপুর স্কুলের (গার্লস সেকশন) পরিচিত কাস্তে মার্কার ভোটার মাহমুদা হাইয়ের ভোট জোর করে আওয়ামী লীগের সমর্থক নৌকায় ভোট দিয়ে বলেন, ‘আপনার  ভোট দেওয়া শেষ’। ভোট কেন্দ্রে কিছু মানুষ উপস্থিত হলেও ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে এবং নিজেদের দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখতে ভোটের  গোপনীয়তা চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন কমিশন ছিল নির্বিকার। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের জনৈক নেতা ভোটের দিন কেন্দ্র দখল ও নিয়ন্ত্রণে রাখার যে কথা বলেছিলেন, সে বিষয়েও নির্বাচন কমিশনকে ভ‚মিকা নিতে দেখা যায়নি। এসব ঘটনা নতুন প্রজন্মের ভোটারদেরকেও ভোটদানে নিরুৎসাহিত করে তুলেছিল। যা পুরো ভোট ব্যবস্থাকেই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ অবস্থা বহাল থাকলে, বারবার ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ ভবিষ্যতে আরও ভোটবিমুখ হয়ে উঠবে। যা গণতন্ত্রকে আরও হুমকির মুখে ফেলবে।  নেতৃবৃন্দ সচেতন দেশবাসীকে নিজেদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, সিপিবি চলমান দুঃশাসন, গণতন্ত্র ও সামগ্রিক ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে সামনের কাতারে লড়াই চালিয়ে যাবে। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন



এই পাতার আরো খবর