ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বিনোদন যখন দূষণ
ইসমাইল হোসেন লিমন:

আজকাল যেকোনো অনুষ্ঠানে উচ্চ স্বরে গান বাজানোটা খুবই সাধারন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিয়ে, সুন্নতে খৎনা, জন্মদিন এমনকি পবিত্র ধর্ম পালনেও বাজানো হচ্ছে বিভিন্ন ভাষা আর ধরনের গান। সকল আয়োজনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে গান বাজানোটা। আসলে এটা কতোটুকু আমাদের ঐতিহ্য বা পরিবেশ বান্ধব? প্রতিবেশী বা আশপাশের মানুষের উপর এটার কেমন প্রভাব পড়ে? আমরা কতোটুকু ভেবেছি? নাকি না ভেবেই সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিচ্ছি? আমরা যে গানগুলো বাজাচ্ছি তা থেকে আমদের পরবর্তী প্রজন্ম কি শিখছে?

গানের জন্ম হয়েছে মানুষকে বিনোদিত করার জন্য। মানুষের চিন্তা চেতনার মধ্যে নতুন ভাবধারা সৃষ্টির জন্য। অথচ আজ কি হচ্ছে আমাদের সমাজে? অশ্লীল ভাষা দিয়ে গান বানানো হচ্ছে। প্রযুক্তির প্রভাবে বিভিন্ন শব্দ দিয়ে এটাকে আকর্ষণীয় করা হচ্ছে। আর আমরা সেই শব্দের জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিয়ে সকলে মিলে হই-হুল্লোড় করছি। শব্দগুলো অনেক জোরে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আঘাত করছে। কোন হার্টের রোগী বা অন্য কারোর কোন সমস্যা হচ্ছে কি না ভাবছি না। কবরে লাশ দাফন করতে গিয়ে দূর থেকে কানে ভেসে আসছে অশ্লীল গান। কেউ একজন মারা গেছে সবাই মর্মাহত, শোকাহত; অথচ দূর থেকে উচ্চ শব্দের অশ্লীল গান ভেসে আসছে লাশের বাড়িতে!

ঈদের নামাজ শেষ হতে না হতেই রমজানের ওই রোজার শেষের পরিবর্তে বাজানো হচ্ছে হিন্দি-ইংরেজিসহ অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ গান। পূজার সময় পুরোহিত হয়ত ঠিকমতো প্রার্থনা করতে পারছেন না উচ্চশব্দের গানের তোড়ে। সবচেয়ে বড় বিষয় যে জাতি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে সেই দেশে ভিন্ন ভাষার গান বেশি বাজানো হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভাষার গান বাজিয়ে নাচানাচি করা হচ্ছে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে যুবক যুবতী সবাই ভিন্ন ভাষার গান রপ্ত করছে। লালন, আব্বাসউদ্দিন, রুনা লায়লা, আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের দেশ আজ ভিন্ন ভাষা আর অশ্লীল গানের কাছে একপ্রকার জিম্মি হয়ে গেছে। আমাদের দেশের কোন শিল্পী কিছুটা চটকদার গান করলেই চারিদিকে সমালোচনার জোয়ার উঠে যায়। কিন্তু ভিন্ন ভাষার এইসব অশ্লীল গানের ক্ষেত্রে কেন এমনটি হয় না? উচ্চ শব্দ, ভিন্ন ভাষা আর অশ্লীল গান আজ আমাদের পরিবেশ আর মানুষকে দূষিত করছে । পরবর্তী প্রজন্মের উপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। আমাদের কি কিছুই করার নেই ?

লেখক পরিচিতি: শিক্ষার্থী ই-মেইল:limonahmed811@gmail.com

এই বিভাগের সকল লেখা ও ছবির দায়-দায়িত্ব লেখকের।

বিডি-প্রতিদিন/১৮ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ



এই পাতার আরো খবর