ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রহরের গান- ৪
দিদার মুহাম্মদ

ছোটবেলায় মা বলতেন, 'বেশি দূর যেও না।'

আমি বলতাম 'আচ্ছা।'

বেশি দূর যাওয়া মানে বুঝতাম বাড়ির সামনে ধানক্ষেত পার হয়ে,  স্কুলঘরের পর হাইওয়ে পেরিয়ে যাওয়া,  নয়তো, হিন্দুবাড়ির পর আখ সেন্টার পার হয়ে  ব্রিজের ওপারে বাহিরদিয়া কিংবা পারচর চলে যাওয়া

ভাবতাম, কুমার নদীর বুকে নড়বড়ে সাঁকোটা পার হয়ে  বৈঠাখালী নুরু স্যার বা মোহাম্মাদ মাস্টেরের বাড়ি পর্যন্ত যাওয়া হয়তো কখন ভাবতাম কবির সাবের বুনিয়াদি স্কুলের পর জোদ্দার বাড়ি পার হয়ে জ্ঞানদিয়া চলে যাওয়া। একদিন গিয়েছিলাম বৈকি!

হাঁটতে হাঁটতে চানপুরের গাঙ, ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল। জসীমমেলার মৃত্যুকুঁপে মোটরসাইকেল রেস দেখা হয়নি তখনো যাত্রাপালা দেখতে যাইনি, ওখানে নর্তকীরা ভূগোল পড়ে নাচতো

কাটপিচের ভয়ে সিনেমাহল যাওয়া হয়নি সত্যি বলতে তখনো একা একা শহরে যাওয়াই হয়নি। আচ্ছা, ঠিক কতদূর গেলে তাকে বেশি দূর যাওয়া বলে? শৈশবের কুমার নদীতে ভরা আষাঢ়ে যে জোয়ার আসতো,  স্রোত টেনে নিতো গাজীবাড়ির ঘাট পর্যন্ত সেই নদীর মাঝখান থেকে কাদা তুলবার সময়ও বেশি দূরে যেতাম না।

মা, অনেকটা দূর চলে গেছি তাই এখন আর বলো না, 'বেশি দূরে যেও না।'

কবি: প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান শিক্ষার্থী, মাস্টার অব পারফর্মিং আর্টস​, বেঙ্গালুর বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত।

বিডি প্রতিদিন/৭ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল



এই পাতার আরো খবর